ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারপারসন ও বিশ্বের অন্যতম ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে। উৎকোচের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে নিজের দেশে বিশাল এক সৌরশক্তির প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে তাকে।
স্থানীয় সময় বুধবার (২০ নভেম্বর) নিউইয়র্কের আদালতে গৌতম আদানিকে অভিযুক্ত করা হয় বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
আদানি, তার ব্যবসা এবং প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও অনেকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে।
৬২ বছর বয়সী আদানি ভারতের অন্যতম ধনী ব্যক্তি। তার ব্যবসার সাম্রাজ্য বন্দর এবং বিমানবন্দর থেকে নবায়নযোগ্য শক্তি পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেছেন, নবায়নযোগ্য শক্তি কোম্পানির জন্য চুক্তি জিততে ভারতীয় কর্মকর্তাদের অর্থ দেওয়া হয়েছে।
আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সেই সব বিনিয়োগকারীকে প্রতারিত করেন যারা একটি প্রকল্পে বহু বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছেন। তিনি তাদের তার এই পরিকল্পনার কথা জানাতে ব্যর্থ হন যে, ভারতীয় কর্মকর্তাদের তিনি ২৫ কোটির বেশি ডলার ঘুষ দিয়ে সৌরশক্তি সরবরাহের এই লাভজনক কন্ট্রাক্টটি পান।
উপসহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লিসা মিলার বলেন, অভিযোগে বলা হয়েছে তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে রাষ্ট্রব্যাপী ওই বিশাল জ্বালানি শক্তির কন্ট্রাক্ট গ্রহণ ও অর্থায়ন করতে চেয়েছিলেন।
আদানি গ্রুপ তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।
এই ঘুষের তদন্তের প্রতিবেদন কয়েক মাস ধরেই চলছে। প্রসিকিউটররা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ২০২২ সালে তদন্ত শুরু করেছিল এবং তদন্তে বাধাও এসেছে।
মার্কিন অ্যাটর্নি ব্রিয়ান পিস বলেছেন, অভিযুক্তরা বিলিয়ন ডলার মূল্যের চুক্তি সুরক্ষিত করার জন্য ভারতীয় সরকারী কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে একটি বিস্তৃত স্কিম সাজিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে মূলধন সংগ্রহ করার জন্য ঘুষের পরিকল্পনা সম্পর্কে মিথ্যা বলেছিলেন তারা।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতে এবং যারা আমাদের আর্থিক বাজারের অখণ্ডতার মূল্যে নিজেদের সমৃদ্ধ করতে চায় তাদের থেকে বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করতে আমার কার্যালয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে আদানি ঘুষের পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিতে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করেছেন।
আদানি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী রাজনীতিবিদদের সমালোচনার মুখে আছেন তিনি। তবে আদানি বরাবরই বলে আসছেন, রাজনৈতিকভাবে তিনি কোনো সুবিধা নেন না।
গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আদানি ট্রাম্পকে তার নির্বাচনে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানান এবং যুক্তরাষ্ট্রে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।