• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তহবিল ঘাটতি, ফিলিস্তিনিদের খাদ্য সহায়তা স্থগিত করছে জাতিসংঘ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৩, ১২:২৪ পিএম
তহবিল ঘাটতি, ফিলিস্তিনিদের খাদ্য সহায়তা স্থগিত করছে জাতিসংঘ

তহবিলের ‘তীব্র’ ঘাটতির কারণে আগামী মাস থেকে ২ লাখ ফিলিস্তিনির খাদ্য সহায়তা স্থগিত করতে যাচ্ছে জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তাকারী সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। এতে করে নতুন সংকটের মুখে পড়তে পারেন ফিলিস্তিনিরা। দেশটির অঞ্চলগুলোর জন্য এই সংস্থাটির দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তার  এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তাকারী সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) তহবিলের ‘তীব্র’ ঘাটতির কারণে আগামী মাস ফিলিস্তিনিদের খাদ্য সহায়তা স্থগিত করছে।

ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর সামের আবদেলজাবের জেরুজালেম থেকে ফোনে বলেছেন, “তীব্র তহবিলের ঘাটতির কারণে বেদনাদায়ক এই বিকল্প বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে ডব্লিউএফপি। আগামী জুন মাস থেকে ডব্লিউএফপিকে ২ লাখেরও বেশি মানুষকে সহায়তা প্রদান স্থগিত করা শুরু করতে হবে। যা এই সংস্থাটির বর্তমান সহায়তাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর ৬০ শতাংশ।”

খাদ্য সহায়তা পাওয়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো গাজা এবং পশ্চিম তীরে রয়েছে। এর মধ্যে গাজায় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং দারিদ্র্য সবচেয়ে বেশি।

জাতিসংঘের এই সংস্থা দরিদ্র ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রতি মাসে জনপ্রতি ১০ দশমিক ৩০ মার্কিন ডলার মূল্যের মাসিক ভাউচার এবং খাবারের প্যাকেট সহায়তা হিসেবে দিয়ে থাকে। তবে সহায়তা স্থগিতের সর্বশেষ এই সিদ্ধান্তের কারণে উভয় কর্মসূচিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

২০০৭ সাল থেকে গাজা উপত্যকা শাসন করে আসছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস। আর এই কারণে সেই সময় থেকেই ভূখণ্ডটি অন্যায়ভাবে অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি এবং জাতিসংঘের রেকর্ড অনুসারে, অবরুদ্ধ এই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ২৩ লাখ মানুষ বসবাস করে। গাজার বিপুল সংখ্যক এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৪৫ শতাংশ বেকার এবং ৮০ শতাংশ আন্তর্জাতিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল।

আবদেলজাবের বলেছেন, “খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভর করা লাখ লাখ মানুষের ওপর অনিবার্য এবং কঠিন সিদ্ধান্তের প্রভাব বুঝতে পারছে ডব্লিউএফপি।”

মূলত হামাস শাসকদের বিষয়ে নিরাপত্তার উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে গাজা ভূখণ্ডে মিশরকে সঙ্গে নিয়ে একত্রে অবরোধের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে ইসরায়েল। আর এভাবেই বছরের পর বছর ধরে গাজা ভূখণ্ডে মানুষ ও পণ্যের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করে রাখা হয়েছে।

অবশ্য গাজা এবং পশ্চিম তীরে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষকে জাতিসংঘের এই সংস্থা সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রাখবে বলে আবদেলজাবের বলেছেন। তার দাবি, যারা নিজেদের খাবার না পাওয়ার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে তাদের বাঁচানোর জন্যই সহায়তা স্থগিতাদেশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এমনকি তহবিল না পাওয়া গেলে ডব্লিউএফপি চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে খাদ্য এবং নগদ সহায়তা সম্পূর্ণভাবে স্থগিত করতে বাধ্য হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি গাজা সিটিতে ডব্লিউএফপি অফিসের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন। এসময় তারা ‘নো টু হাঙ্গার’ স্লোগান দেন।

ফারাজ আল-মাসরি নামে দুই সন্তানের বাবা বলছেন, “অর্থ সহায়তার ভাউচার হলো জীবন। তারা আমাদের যে বার্তা পাঠিয়েছে তা মৃত্যুর সমান। কারণ এখানে আয়ের আর অন্য কোনো উৎস নেই।”

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!