ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রেজনিকভ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার আগে থেকেই এই মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার রাতে দেওয়া ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে ‘নতুন করে অগ্রসর’ হওয়ার সময় এসেছে।
এদিকে ওলেক্সি রেজনিকভকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে ওই পদে রুস্তেম উমেরভকে মনোনীত করেছেন জেলেনস্কি। রেজনিকভের উত্তরসূরি হিসেবে মনোনীত এই ব্যক্তি ইউক্রেনের স্টেট প্রপার্টি ফান্ড পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।
রাজধানী কিয়েভ থেকে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুনভাবে অগ্রসর হওয়া এবং সামগ্রিকভাবে সামরিক ও সমাজ উভয়ের সাথে মিথস্ক্রিয়ার জন্য নতুন পন্থার প্রয়োজন।”
অবশ্য ইউক্রেনীয় মিডিয়ার ধারণা, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ হারানো ওলেক্সি রেজনিকভ লন্ডনে কিয়েভের নতুন রাষ্ট্রদূত হবেন। কারণ ব্রিটেনের সিনিয়র রাজনীতিবিদদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছেন তিনি।
বিবিসি বলছে, ৫৭ বছর বয়সী রেজনিকভ ইউক্রেনের যুদ্ধের শুরু থেকেই একজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এই কর্মকর্তা নিয়মিত ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিয়েছেন এবং রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় আরও সামরিক সরঞ্জাম পেতে লবিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে তার বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি বেশ কিছুদিন ধরেই প্রত্যাশিত ছিল। গত সপ্তাহে রেজনিকভ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করে অন্য কোনো অবস্থানে যাওয়া যায় তার সন্ধান করছেন তিনি।
ইউক্রেনীয় মিডিয়ার মতে, সাবেক এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যদি তাকে অন্য কোনো দায়িত্বে কাজ করার সুযোগ দেন, তবে তিনি সম্ভবত রাজি হবেন।
উল্লেখ্য, রেজনিকভের বরখাস্তের পদক্ষেপটি এমন সময়ে নেওয়া হলো যখন ইউক্রেন তার পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে আরও উন্নত অস্ত্র নিয়ে ধীরগতিতে এবং রক্তাক্ত পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।
অবশ্য যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনে অগ্রগতি ধীর হলেও শীর্ষ ইউক্রেনীয় জেনারেলরা রোববার বলেছেন, রাশিয়ার সেনাদের গড়া প্রতিরোধ ব্যবস্থার সবচেয়ে শক্তিশালী ধাপটি ভেঙে ফেলেছে ইউক্রেনের সৈন্যরা।