পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানে বিলম্ব নিয়ে সমালোচনা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার এমন সমালোচনার পর লিথুনিয়ায় জোটটির শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নেতারা বলেছেন, যখন ‘জোটের সবাই রাজি হবেন এবং শর্তসমূহ’ মিলে যাবে তখনই ইউক্রেন ন্যাটোয় যোগ দিতে পারবে।
বুধবার (১২ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, জেলেনস্কি ন্যাটোর সদস্যভুক্তিতে বিলম্বকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যায়িত করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করছেন, দিনতারিখ না উল্লেখ করাটা ইউক্রেনের জন্য হিতে বিপরীত হবে।
এক বিবৃতিতে ন্যাটো জানিয়েছে, দ্রুত আগানো দরকার তা অনস্বীকার্য, তবে এর জন্য নির্ধারিত সময় বলা হচ্ছে না।
এর আগে জেলেনস্কি বলেছিলেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে আমন্ত্রণ জানানো বা সদস্য করার ‘কোনো প্রস্তুতি নেই’ বলে মনে হচ্ছে।
তিনি বর্তমানে লিথুনিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে রয়েছেন। দেশটির রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ন্যাটোতে যোগ দিতে চায়।
ইউক্রেন কখন এবং কীভাবে জোটে যোগ দিতে পারে তা হয়তো ন্যাটো জানায়নি। কিন্তু কূটনীতিকরা জোর জানিয়েছেন, তারা ইউক্রেনকে সদস্য করার জন্য একটি পরিষ্কার পথ তৈরি করছেন।
ইউক্রেন বুঝে গেছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলাকালে ন্যাটোর সদস্যপদ পাবে না দেশটি। তবে নবগঠিত যে ‘ন্যাটো-ইউক্রেন কাউন্সিল’, এর মাধ্যমে কিয়েভ চাইলে পৃথিবীর শক্তিশালী সামরিক জোটটির সব দেশের সঙ্গেই বৈঠক করতে পারবে। ন্যাটোর কিছু সদস্য রাষ্ট্র ইউক্রেনকে সদস্য করা হলে রাশিয়া যুদ্ধটাকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করার মওকা পেয়ে যাবে বলে মনে করছে।
তবে আশা ছাড়ছেন না জেলেনস্কি। ভিলনিয়াসে প্রচুর লোকজনের উপস্থিতিতে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘ন্যাটো ইউক্রেনকে নিরাপত্তা দেবে। ইউক্রেন ন্যাটোকে আরও শক্তিশালী করবে।’
এর আগে বিবিসি জানিয়েছিল, ইউক্রেনের সদস্যপদ নিয়ে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এ সম্মেলনের শেষে কিছু মিত্র কিয়েভকে ভবিষ্যতে রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে নতুন নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেবে। তারা আরও অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের বিষয়েও আলোচনা করবে।
ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, “এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আমি পুরোপুরি নিশ্চিত যে ইউক্রেনের বিষয়ে আমাদের ঐক্য এবং একটি শক্তিশালী বার্তা থাকবে এ সম্মেলনে।”