গ্রিসে দুটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২। আহত হয়েছেন অন্তত ৮৫ জন। দুর্ঘটনাকবলিত দুটি ট্রেনের একটি যাত্রীবাহী, অপরটি মালবাহী ট্রেন ছিল। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় লারিসার কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফায়ার ব্রিগেড জানিয়েছে, গত কয়েক দশকের মধ্যে এটি গ্রিসে সবচেয়ে মারাত্মক রেল দুর্ঘটনা। তবে দুর্ঘটনার কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
থেসালির গভর্নর বলেছেন, মধ্য গ্রিসের লারিসা শহরের বাইরে একটি পণ্যবাহী ট্রেনের সঙ্গে এথেন্স থেকে উত্তরের শহর থেসালোনিকিগামী একটি আন্তনগর ট্রেনের সংঘর্ষ ঘটে। এতে ট্রেনের কয়েকটি বগিতে আগুন লেগে যাত্রীরা অগ্নিদগ্ধের শিকার হন। তাদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ট্রেনে থাকা ২৮ বছর বয়সী একজন যাত্রী বলেন, “আমরা একটি বিস্ফোরণে শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম। এটি ১০ সেকেন্ডের মতো ছিল।”
এদিকে বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে আগুন ধরে যায়। আহতদের উদ্ধারে এবং আগুন নেভাতে সেখানে দ্রুত ছুটে যান জরুরি পরিষেবা সংস্থার সদস্যরা।
লারিসার গভর্নর কন্সতানতিনোস আগরোসতোস স্কাই টিভিকে বলেছেন, “সংঘর্ষ অনেক শক্তিশালী ছিল। যাত্রীবাহী ট্রেনটির চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দুটি বগি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। ট্রেনের ভেতর থেকে প্রায় ২৫০ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।”
স্কাই টিভির একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সংঘর্ষে লাইনচ্যুত হয়ে যাওয়া বগিগুলো থেকে আগুনের শিখা ও কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী বের হচ্ছে। সেইসঙ্গে রাস্তাজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে ধ্বংসাবশেষ। উদ্ধারকর্মীদের গাড়িতে টর্চ নিয়ে আটকে পড়া যাত্রীদের খোঁজ করছেন।
ফায়ার ব্রিগেডের মুখপাত্র ভ্যাসিলিস ভার্থাকোগিয়ানিস একটি টেলিভিশন বলেছেন, “ট্রেন দুটির সংঘর্ষের মাত্রা তীব্র হওয়ায় আহত কিংবা নিহতদের উদ্ধারে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।”
একজন স্বেচ্ছাসেবক উদ্ধারকর্মী বলেন, “আমরা একটি ট্র্যাজেডির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে জীবিত, মৃত মানুষকে বের করে আনছি। যতক্ষণ না আমরা শেষ ব্যক্তিকে খুঁজে পাচ্ছি আমরা এখানে সারারাত থাকব।”
স্থানীয় একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, যাত্রীবাহী ট্রেনটিতে প্রায় ৩৫০ জন ভ্রমণ করছিলেন। যেটি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এথেন্স ছেড়েছিল।
এর আগে ১৯৭২ লারিসার বাইরে দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হয়েছিল। গ্রিসের প্রাচীন রেল ব্যবস্থা আধুনিকীকরণের প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।