তুরস্কের নতুন ‘ডিস-ইনফরমেশন ল’ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমনে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই আইনে সাংবাদিক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের অনলাইনে ভুল তথ্য ছড়ানোর দায়ে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। গত বছর অক্টোবরে পাস হয় তুরস্কের ‘ডিস-ফরমেশন ল।’ সে সময় থেকেই এই আইন ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে পাস করা হচ্ছে এবং তা বিরোধী মত দমন করতে ব্যবহৃত হতে পারে’ বলে সমালোচনা হয়েছিল।
রোববার (১৪ মে) তুরস্কে প্রেসিডেন্ট ও সংসদ নির্বাচন। এ অবস্থায় অনেকেই এই আইনের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
সমালোচকরা শুরু থেকেই বলছেন যে, আইনে ‘ভুয়া তথ্য’ বলতে কী বোঝানো হচ্ছে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। তুরস্ক কর্তৃপক্ষ চাইলে এই আইনে সামাজিক মাধ্যমকেও ব্যবহারকারীর তথ্যদানে বাধ্য করতে পারে।
এক বিবৃতিতে মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে তুর্কি সরকার অনলাইনে ভিন্নমত দমন বাড়িয়েছে। সংস্থাটির গবেষক ডেবোরাহ ব্রাউন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, “নির্বাচনের আগে তুরস্কের সরকার সামাজিকমাধ্যম ও স্বাধীন অনলাইন মাধ্যমগুলোর ওপর সেন্সরশিপ বাড়িয়েছে এবং নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করেছে।”
সরকারের তথ্যের সমালোচনা করায় গত মাসে এমনকি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলোর কোনো কোনোটিকে জরিমানাও করেছে সরকার। বিরোধীপক্ষের একমাত্র মুখপাত্র ‘ফক্সটিভিকে’ তাদের মাসিক আয়ের ৩ ভাগ ফাইন করা হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে রিসোর্স সেন্টার অন মিডিয়া ফ্রিডম ইন ইউরোপ।
যদিও টুইটার ও মেটা এখন পর্যন্ত তথ্য চাওয়ার আবেদনে সাড়া দেয়নি।
এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে তুর্কি পুলিশ ভূমিকম্প নিয়ে উস্কানিমূলক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৫০ হাজার মানুষ মারা যান।
তুরস্কের ফ্রিডম রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের প্রকল্প কর্মকর্তা শাগিন এরোলু বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি। কিন্তু সরকারি তথ্যকে প্রশ্ন করা হলে তার ফল ভালো নাও হতে পারে। আপনি বলতে পারবেন না যে আমরা আমাদের হিসেব করেছি... আপনাকে সরকারের ভাষ্যের সঙ্গে সুর মেলাতে হবে।”