যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার আগেই এক ধাক্কা খেলেন। কয়েকজন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ট্রাম্প-সমর্থিত একটি রাষ্ট্রীয় অর্থবিলের (সরকারি ব্যয় প্যাকেজ) বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন।
বিলটি মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাস হতে ব্যর্থ হওয়ায় শনিবার (২১ ডিসেম্বর) থেকে মার্কিন কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যা যা ‘শাটডাউন’ নামে পরিচিত।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় সরকারকে অর্থায়নের জন্য মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি আনা হয়। তবে বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা বিলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে বিলটি পাসে নিজের দলীয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আহ্বান তারা উপেক্ষা করলেন।
অনেকেই বলছেন, ট্রাম্প সমর্থিত রাষ্ট্রীয় অর্থ বিলটির বিরুদ্ধে দেওয়া ভোট ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির মধ্যে সুস্পষ্টভাবে ফাটল তৈরি করল। আসছে জানুয়ারিতে ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব নেবেন।
শুধু তাই নয়, দুই কক্ষবিশিষ্ট মার্কিন কংগ্রেসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণও নেবেন রিপাবলিকানরা। ট্রাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই এমন একটা ধাক্কার রেশ চলবে আগামীতেও। অনেকের ভাষ্য, রিপাবলিকান পার্টির মধ্যকার ‘ফাটল’ আসছে বছর আবারও দেখা দিতে পারে।
এদিকে, ট্রাম্প সমর্থিত রাষ্ট্রীয় অর্থ বিলটি পাস না হওয়ার কারণে ‘শাটডাউন’ হলে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর নির্ভরশীল নানা কর্মসূচি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। সরকারের বিভিন্ন বিভাগে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। বিমানবন্দরে চলাচল ব্যাহত হবে।
সে ক্ষেত্রে আসন্ন ক্রিসমাসের ভ্রমণ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে। যদিও দ্রুত এগিয়ে আসা সরকারি ‘শাটডাউন’ এড়ানোর ক্ষেত্রে কোনো সুস্পষ্ট পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত মার্কিন কংগ্রেসের সামনে দেখা যাচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন।
অবশ্য দায়িত্ব গ্রহণের আগেই রাষ্ট্রীয় অর্থ বিলটির পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য ট্রাম্প প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের চাপও দিয়েছিলেন। তবে দলটির কট্টরপন্থী সদস্যরা তার আহ্বানে সাড়া দেননি।
রিপাবলিকান আইনপ্রেণেতারা বিলটির পক্ষে সমর্থন দিতে অস্বীকৃতি জানান। শেষ অবধি বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ১৭৪টি। আর বিপক্ষে পড়ে ২৩৫টি। বিলটির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩৮ জন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা।
সূত্রমতে, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে সরকারি তহবিলের মেয়াদ শেষ হবে। বিলটি পাস হলে তা তহবিল জোগানোর মেয়াদ বাড়াত। একই সঙ্গে তা ঋণের সীমা (ঋণ নেওয়ার সর্বোচ্চ পরিমাণ) স্থগিত করত।