হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নানা নথির অপব্যবহারসহ ডজনখানেক অভিযোগের শুনানিতে মিয়ামির ফেডারেল আদালতে হাজির হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ সময় তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার ফ্লোরিডার ওই আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কাঠগড়ায় তোলা হয়।
বুধবার (১৪ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মিয়ামি রাজ্যের মার্শালে একজন ম্যাজিস্ট্রেট বিচারকের সামনে উপস্থিত হন ট্রাম্প। তার বিরুদ্ধে গোপন নথি রাখার ৩৭টি অভিযোগ আনা হয়েছে। ১০ মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা ও তদন্ত সংস্থা এফবিআই ফ্লোরিডায় অবস্থিত ট্রাম্পের বাড়ি থেকে এসব নথি উদ্ধার করে। কিছু কিছু নথি তার বাড়ির বলরুম ও বাথরুমেও পড়ে ছিল
তিনি ইতোম্যেধই নিউ ইয়র্কে আরেকটি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে আছেন, যার বিচার আগামী মার্চে শুরু হওয়ার কথা। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের দায়ের করা এই ফৌজদারি মামলাটি আগামী বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে নামা ট্রাম্পের জন্য আরেকটি আইনি ধাক্কা। চলতি বছর এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো তিনি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন।
ট্রাম্প আদালতে প্রবেশ করলে বিচারক জনাথন গুডম্যান সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আনা ৩৭টি অভিযোগ পড়ে শোনান।
আদালতে হাজির হতে সোমবার রাতটি রিসোর্ট ট্রাম্প ন্যাশনাল ডোরালে কাটিয়েছেন তিনি। এর আগে নিউ জার্সির বেডমিনস্টারে নিজের গলফ ক্লাবে ছিলেন তিনি, সেখান থেকেই বিমানযোগে মিয়ামিতে উড়ে আসেন। এ সময় বাইডেনকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে গালাগাল করে তিনি দাবি করেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে যেন তিনি অংশ নিতে না পারেন সেজন্য বাইডেন এসব করছেন।
এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, “খুব খারাপভাবে হারতে যাওয়া একটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাঝখানে, একজন দুর্নীতিগ্রস্ত প্রেসিডেন্ট তার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে ভুয়া ও বানোয়াট মামলায় গ্রেপ্তার করিয়েছেন। যে মামলায় তিনি ও অন্যান্য প্রেসিডেন্টরাও দোষী হতেন।”
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর মধ্যে ষড়যন্ত্র, মিথ্যা বিবৃতি, বিচারে বাধা এবং গুপ্তচরবৃত্তি আইনের অধীনে অবৈধভাবে গোপনীয় নথি ধরে রাখা আছে বলে জানা গেছে। রাষ্ট্রীয় গোপনীয় নথি অবৈধভাবে নিজের কাছে রাখা এবং সেগুলো গোসলখানায় রেখে দেওয়ার মতো অব্যবস্থাপনাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে একটি জরিপে ওঠে এসেছে ট্রাম্পের রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পার্টির ৮২ শতাংশ সমর্থক মনে করেন তার বিরুদ্ধে আনিত এসব অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তিনি যেন আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন সেজন্য এগুলো করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্তকারীরা ৪৯ পাতার একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। যার মধ্যে তার বাড়ি থেকে পাওয়া নথির ছবিও রয়েছে। কিন্তু সাবেক প্রেসিডেন্ট এ অভিযোগপত্রকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।