এ বছরের ড্রোন ফটো অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের তোলা ছবিতে ফুটে উঠেছে প্রকৃতি আর প্রকৌশলের অপরূপ নান্দনিকতা। একিসঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য স্থানের মতো ফুটে উঠেছে চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্যের রঙও।
ফটো অ্যাওয়ার্ডের বিজয়ীদের মধ্যে রয়েছেন একজন বাংলাদেশিও। ড্রোন দিয়ে তোলা হলুদ ধান ক্ষেতের সেই ছবিটি বিচারকদের মন কেড়েছে।
মার্কিন গণমাধ্যম এনপিআর এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আকাশ থেকে তোলা এই ছবিগুলো আপনার চারপাশ সম্পর্কে নতুনভাবে ভাবতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশের উজ্জল হলুদ ধানক্ষেত বা পোল্যান্ডের খেলার মাঠ যা উপর থেকে দেখতে মূল্যবান পাথরে খোদাই করা মোজাইকের মতো।
বিপরীতে সিরিয়ার যুদ্ধ বিধ্বস্ত ধ্বংসস্তুপের মধ্যেই ইফতার করার দৃশ্য দুঃখ ও পবিত্রতার প্রতীক। নানা মিশেলে এসব কিছু আপনার ভাবনাতে এনে দিতে পারে আরও নতুন কিছু।
বাংলাদেশি আলোকচিত্রী মো. তানভীর হাসান রোহানের ড্রোন দিয়ে তোলা ‘রাইস প্রসেসিং’ (ধান প্রক্রিয়াকরণ) শীর্ষক ছবিটি এ বছরের ড্রোন ফটো অ্যাওয়ার্ডের প্রতিযোগিতায় স্থান করে নিয়েছে।
তানভীরের এই ছবিটির মাধ্যমে বিশ্বের সামনে গ্রামবাংলার একটি নিত্য সাধারণ কাজের শৈল্পিক চিত্র ফুটে উঠেছে। জানা গেছে, ২০২১ সালেও তানভীরের তোলা আরেকটি ছবি সেই প্রতিযোগিতায় স্থান পেয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাসকারী তানভীর গণমাধ্যমকে বলেন, ধানক্ষেতটি আসলে কতোটা সুন্দর আসলে মাটিতে দাঁড়িয়ে তা বোঝা যায় না।
আপনি যখন অনেক উঁচু থেকে এটি দেখবেন, তখন ক্ষেতের লাইনগুলো আপনার চোখে পড়বে, মাঠের কর্মীরা যে হেঁটে, লাইনে দাঁড়িয়ে কাজ করছে সেটি আপনার চোখে পড়বে। এটি সত্যিই এক নান্দনিক দৃশ্য।
তানভীরের জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাজধানী ঢাকায়। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসবাস করছেন। ফটোগ্রাফিতে তার দশ বছরের অভিজ্ঞতা।
নিউইয়র্ক ইনস্টিটিউট অফ ফটোগ্রাফি থেকে ফটোজার্নালিজমের ওপর ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। জাতীয় পর্যায়ে বহুবার বিজয়ী হওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ৭০০টিরও বেশি পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
এছাড়াও প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে টানা দুই বার ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ট্রাভেল ফটোগ্রাফার অফ দ্য ইয়ার প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।
ড্রোন ফটো অ্যাওয়ার্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, তানভীর হাসান রোহানের তোলা ছবিগুলো ৪৫টিরও বেশি দেশে প্রদর্শিত হয়েছে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
ড্রোন ফটো অ্যাওয়ার্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আরও জানান যায়, তানভীর হাসান রোহানের তোলা ছবিগুলো ৪৫টিরও বেশি দেশে প্রদর্শিত হয়েছে।
তার অনেক ছবি প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পত্রিকা ও সংবাদপত্রে। তানভীরের ফটোগ্রাফির সাফল্যের ঝুড়িতে আছে আরও নানান আন্তর্জাতিক পুরস্কার।
ওই প্রতিযোগিতায় তানভীরের ছবি ছাড়াও বিশ্বের আরও কয়েকজন ফটোগ্রাফারে ছবি স্থান পেয়েছে। যেমন- সিরিয়ার যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি শহরে ইফতার আয়োজনের ছবিটি তুলেছেন মোনেব তাইম।
পোল্যান্ডের নান্দনিক খেলার মাঠের ছবি তুলেছেন সেবাস্তিায়ান পিওরেক। রয়েছে আরও অন্য ফটোগ্রাফারদের ছবিও।
প্রসঙ্গত, ড্রোন ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতাটি ৬ বছর আগে শুরু হয়। এ বছরের প্রতিযোগিতায় ৯টি বিভাগে ১০৪টি দেশের অপেশাদার ও পেশাদার আলোকচিত্রীদের ১৪ হাজার ছবি স্থান পায়। সবগুলো ছবিই তোলা হয় ড্রোন ক্যামেরার সাহায্যে।