• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আজ শুরু হচ্ছে ন্যাটোর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মহড়া


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১২, ২০২৩, ১১:১৪ এএম
আজ শুরু হচ্ছে ন্যাটোর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মহড়া

চার বছরের প্রস্তুতির পর পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিমান প্রতিরক্ষা মহড়া ‘এয়ার ডিফেন্ডার ২৩’ করতে যাচ্ছে আজ সোমবার (১২ জুন)। জোটের কোনো সদস্য আক্রান্ত হলে ন্যাটোর জবাব কেমন হবে মহড়ায় তা দেখানো হবে।

১৯৪৯ সালে সামরিক জোট গঠিত হওয়ার পর এটি ন্যাটোর সবচেয়ে বড় মহড়া। মজার্মানি এই মহড়ার ‘হোস্ট’ এবং ‘লজিস্টিক্যাল হাব’ হিসেবে কাজ করবে।

জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ১২ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত এ মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। মহড়ায় ২৫টি দেশ অংশ নেবে। উত্তর সাগরে উত্তর জার্মানির উপর, পূর্বে এবং দক্ষিণ জার্মানির একটি ছোট স্ট্রিপে এই মহড়া চলবে। এর ফলে এ অঞ্চলগুলোতে দৈনিক পর্যায়ক্রমে কয়েক ঘণ্টা বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। এতে বেসামরিক ফ্লাইট চলাচলে দেরি হতে পারে। ২৫০টি বিমান ছয়টি সামরিক ঘাঁটি জুড়ে অবস্থান করবে। যুক্তরাষ্ট্র একাই আটলান্টিকজুড়ে ১০০টি বিমান পাঠাচ্ছে। আকাশ-মহড়ায় অংশগ্রহণকারীরা তিনটি ফ্লাইট অঞ্চলে সংকট পরিস্থিতিতে কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে তার প্রশিক্ষণ দেবে।

১০ দিনের সামরিক মহড়া চলাকালীন জার্মান বিমানবন্দরগুলো তাদের পরিচালনার সময়ও রাত অবধি বাড়িয়েছে।

জার্মান বিমান বাহিনীর একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইঙ্গো গারহের্ৎজ বলেন, “আশা করি, এই সমস্ত ব্যবস্থা কার্যকর হলে, কোনো ফ্লাইট বাতিল হবে না।”

তবে বিমান চলাচলে দেরি হওয়ার বিষয়টি তিনি উড়িয়ে দেননি। জার্মান বিমান চালনা বিশেষজ্ঞ ক্লেমেন্স বলিনজারের মতে, জার্মান বেসামরিক এবং সামরিক নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার অপারেটরদের কাজে সমন্বয় করা হয়েছে। তিনি বলেন, “ফ্লাইট কন্ট্রোলাররা বিমানবাহিনীতে তাদের সহকর্মীদের সঙ্গে একটানা যোগাযোগ বজায় রাখছেন।”

ফরাসি বিমান বাহিনী সাধারণ কোনো মহড়া বা অভিযান চলাকালীন নির্ধারিত ফ্লাইটের জন্য বারবার পুরো ফ্লাইট জোন বন্ধ করে দেয়। সেক্ষেত্রে জার্মানিতে বেসামরিক এবং সামরিক ফ্লাইটগুলো প্রতিদিন একে অপরের সঙ্গে সমন্বয় করে চলে। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় জার্মান এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের এটি একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের টরবেন আর্নল্ড বলেন, “ন্যাটো তার এয়ার ডিফেন্ডার মহড়ার মাধ্যমে শত্রুপক্ষকে প্রতিরোধের একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা পাঠাতে চায়। তিনি বলেন, “তারা স্পষ্ট রাজনৈতিক সংকেত দিতে চায়। তারা বোঝাতে চায়, যদিও এই আকাশসীমা অত্যন্ত ব্যস্ত, তবু আমরা এর প্রতিটা কোনা রক্ষা করতে চাই।”

ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর ১০ হাজারেরও বেশি সেনা বহু মহড়ায় অংশ নেবে। বিমান বাহিনীর পক্ষে থেকে গেরহার্ৎজ বলেন, “এর মধ্যে কিছু মহড়া স্থলভিত্তিক হবে, যার মধ্যে একটি হলো ‘এয়ারফিল্ড থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া৷’ ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা আফগানিস্তানে তাদের মিশন দ্রুত শেষ করার পরে কাবুল বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। সেই সময়েই এই অনুশীলনটি সময়সূচিতে রেখেছিল ন্যাটো।”

আকাশ থেকে স্থল সেনাদের সমর্থন, শত্রু জোটের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিমান এবং ন্যাটোর ফাইটার বোমারু বিমানের মধ্যম-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের বাধ। এ জাতীয় পরিস্থিতিও মহড়ার অংশ হিসেবে থাকবে। মার্কিন বাহিনী মহড়ায় অংশ নিতে জোটের সবচেয়ে আধুনিক ফাইটার জেট এফ-৩৫ স্টিলথ কমব্যাট এয়ারক্রাফট পাঠাচ্ছে। নর্থ সি এলাকায় শত্রু সাবমেরিন বা জাহাজের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক মহড়া দেখা যাবে। আর্নল্ড উল্লেখ করেছেন, শত্রু ‘মহাদেশ ছাড়া অন্য অঞ্চল থেকেও আক্রমণ করতে পারে।’

এটা কোনো গোপন বিষয় নয় যে যখন এই ‘শত্রু’ এর কথা আসে, তখন ইউরোপের অনেকেই প্রথমে রাশিয়ার কথাই ভাবে৷ ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে। তারপর থেকে একটানা তারা ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ৭ জুন বার্লিনে মিডিয়ার কাছে এয়ার ডিফেন্ডার ২৩-এর পরিকল্পনা উপস্থাপন করার সময়, লেফটেন্যান্ট জেনারেল গেরহার্ৎজ একবারও রাশিয়ার কথা উল্লেখ করেননি।

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!