ঋণ গ্রহণের সীমা বাড়াতে দফায় দফায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বলেছে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়। বাইডেনও ঋণসীমা বাড়ানোর জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই দৌড়ঝাঁপ করছে। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির আইনপ্রণেতারা এটি আটকে রেখেছিলেন। একপর্যায়ে দেউলিয়া হওয়ার মতো পরিস্থিতির তৈরি হয় দেশটির।
তবে কয়েক সপ্তাহের আলোচনা শেষে অবশেষে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি ঋণসীমা বাড়াতে সম্মত হয়েছেন। এর মাধ্যমে খেলাপি হওয়ার যে শঙ্কায় মার্কিন সরকার পড়েছিল, সেই শঙ্কাও কেটে গেছে। বর্তমানে দেশটির সরকারের ঋণসীমা হলো ৩১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। যে সীমায় গত জানুয়ারিতেই পৌঁছে গেছে বাইডেন সরকার।
রোববার (২৮ মে) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, বাইডেন ও স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি ঋণসীমা বাড়াতে সম্মত হলেও, বিভক্ত কংগ্রেসে এই চুক্তির আনুষ্ঠানিক অনুমোদন লাগবে।
রিপাবলিকান পার্টি বলছে, যদি সরকার ব্যয় সংকোচন না করে তাহলে তারা কংগ্রেসে ঋণসীমা বৃদ্ধির বিষয়টির অনুমোদন দেবে না। তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্যরা প্রস্তাব দিয়েছিল, ব্যয় সংকোচনের বদলে নির্দিষ্ট কিছু খাতের ট্যাক্সের পরিমাণ বাড়ানো হোক। কিন্তু এটি মানেনি রিপাবলিকান পার্টি।
এদিকে বাইডেন ও ম্যাকার্থির মধ্যে কী চুক্তি হয়েছে, সেটির বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি।
সংবাদমাধ্যম সিবিএস জানিয়েছে, বেসামরিকখাতগুলোর ব্যয় দুই বছর একই রাখা হবে এবং ২০২৫ সালে এটি ১ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে মর্মে চুক্তি করা হয়েছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে স্পিকার ম্যাকার্থি বলেন, “আমরা একটি নীতিগত চুক্তিতে পৌঁছেছি। আমাদের এখনো অনেক কাজ করা বাকি। তবে আমি মনে করি এটি এমন চুক্তি যেটি আমেরিকানদের ন্যায্য পাওনা। ব্যয় সংকোচনের ঐতিহাসিক বিষয় রয়েছে এতে। এটি সাধারণ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দেবে। সরকারের অতিরিক্ত ব্যয়ের লাগাম টানবে। নতুন কোনো ট্যাক্স নেই, নতুন কোনো সরকারি কার্যক্রম নেই। এই আইনে অনেক কিছু আছে।”
অপরদিকে এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, “এ চুক্তি আমেরিকানদের জন্য একটি ভালো খবরও। তবে এ চুক্তিতে আপস রয়েছে। যার অর্থ সবাই যা চায় তা পায় না। এটি সরকারের দায়িত্ব।”
পৃথিবীর অন্য দেশগুলোর মতো যুক্তরাষ্ট্রেও ঋণসীমা নির্ধারণ করা আছে। এর বাইরে দেশটির সরকার ঋণ নিতে পারে না। স্বাস্থ্য খাত, সামরিক খাতসহ সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চালানোর জন্য মার্কিন সরকার ঋণ নিয়ে থাকে।
এর আগে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, যদি ১ জুনের মধ্যে ঋণসীমা বাড়ানো না যায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো সরকার খেলাপি হবে।