ভারতে একটি অনুষ্ঠানে এক কিশোরের ঠোঁটে চুম্বনের পর জিহ্বা বের করে দিয়ে ‘চুষে’ দিতে পারবে কি না, জানতে চান তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামা। বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি।
এবার তার এ ঘটনার পক্ষে সাফাই গাইলেন তিব্বতের শীর্ষ একজন নেতা। এ ছাড়া আধ্যাত্মিক এ নেতাকে ‘নির্দোষ’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। পাশাপাশি বলেছেন যে এটি লামার ‘স্নেহপূর্ণ আচরণ’।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, দালাই লামার জিব চুষতে বলার পক্ষে দাঁড়ালেন তিব্বতের নির্বাসিত সরকারের প্রধান পেনপা সেরিং।
বৃহস্পতিবার সেরিং বলেছেন, “দালাই লামার কর্মের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বিতর্কটি তার অনুসারীদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে। দালাই লামা সর্বদা পবিত্রতা এবং ব্রহ্মচর্যের মধ্যে বসবাস করেছেন। বছরের পর বছর তার আধ্যাত্মিক অনুশীলন তাকে সংবেদনশীল উপভোগের বাইরে নিয়ে গেছে।”
সেরিং বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করার পেছনে ‘চীনপন্থীদের’ হাত থাকতে পারে। যদিও তিনি দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। সেরিং এই ঘটনাটি রাজনৈতিক হতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন।
গত ফেব্রুয়ারি ধর্মশালায় ‘এমথ্রিএম ফাউন্ডেশন’ দক্ষতা প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করেছিল। ওই কর্মসূচিতে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। মার্চে সংস্থাটি তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টে ওই অনুষ্ঠানের ছবি এবং ভিডিও প্রকাশ করে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ওই কিশোর দালাই লামাকে আলিঙ্গন করতে পারবে কি না, তা জানতে চায়। জবাবে আধ্যাত্মিক এই নেতা তার গালের দিকে চুম্বনের ইঙ্গিত করে বলেন, ‘প্রথমে এখানে’ এবং ছেলেটি তার গালে চুম্বন করে। পরে তাকে আলিঙ্গনও করে।
এরপর কিশোরের হাত ধরে নিজের ঠোঁট নড়াচড়া করে দালাই লামা বলেন, ‘আমি ভাবছি এখানেও’ এবং ছেলেটির ঠোঁটে চুম্বন করেন তিনি।
ওই কিশোরের কপালের কাছে নিজের কপাল এগিয়ে নিয়ে জিহ্বা বের করার আগে বলেন, ‘আমার জিহ্বা চুষে দাও।’ দালাই লামার এমন আবদারে অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকজন হেসে ওঠে। পরে দালাই লামা জিহ্বা বের করে দেয়। ওই কিশোর কিছুটা ইতস্তত বোধ করলেও দালাই লামার নির্দেশ মতো জিহ্বা চুষতে ঝুঁকে যায়। এরপর কিশোর মুখ সরিয়ে নেয় এবং দালাই লামাও তাই করেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ফুটেজ প্রকাশিত হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। নেটিজেনরা কিশোরের প্রতি দালাই লামার এমন আচরণকে অসংগত এবং বিরক্তিকর বলে মন্তব্য করেন।
চীনা শাসনের বিরুদ্ধে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়ার পর ১৯৫৯ সাল থেকে ভারতে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন তিব্বতি বৌদ্ধদের প্রধান ভিক্ষু ও আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামা।