টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পর্যটকদের দেখাতে নিয়ে যাওয়া সাবমেরিন টাইটানের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ডুবো জাহাজে থাকা যাত্রীদের জন্য অক্সিজেন ফুরিয়ে যেতে পারে। ফলে আরোহীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আরও কমে এসেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য মিরর এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। সাবমেরিনটির সাবেক কমান্ডিং অফিসার অ্যান্ডি কোলস আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, অক্সিজেনের অভাবের পাশাপাশি হাইপোথার্মিয়া বা কার্বন ডাই-অক্সাইডের বিষক্রিয়ায় এরই মধ্যে আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে নিখোঁজ সাবমেরিনের পাঁচ আরোহীর মৃত্যু হতে পারে।
তিনি জানিয়েছেন, উদ্ধার অভিযান জটিল পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাই আরোহীসহ সাবমেরিনটি উদ্ধার করতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। তাই তারা সম্পূর্ণরূপে দমবন্ধ না হওয়ার আগেই সম্ভবত ঘুমন্ত বা অচেতন অবস্থায় চলে গেছেন। অন্য যে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে তা হলো ৩ হাজার ৮০০ মিটার নিচে সমুদ্রের তলদেশ অবিশ্বাস্যভাবে ঠান্ডা। তারা সম্ভবত সেখানে কোনো শক্তি এবং আলো পায়নি। কারণ যদি যানটিতে কোনো যান্ত্রিক শক্তি থাকত, তাহলে তারা সমুদ্রের উপরিভাগে উঠে আসার চেষ্টা করত।
এদিকে নিখোঁজ সাবমেরিন থেকে আবারও শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। ফলে এর তল্লাশি অভিযানের আওতা আরও বাড়ানো হচ্ছে। একটি এইচসি-১৩০ হারকিউলিস ফ্লাইট ৮৭৯ মাইল (১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার) এলাকাজুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে কোস্টগার্ডের ক্যাপ্টেন জেমি ফ্রেডরিক বলেছেন, তল্লাশি অভিযানে শিগগিরই আরও জাহাজ ও রিমোটলি অপারেটেড ভেহিক্যাল (গভীর সাগরে অনুসন্ধান করার যন্ত্র) যুক্ত করা হবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার অনুসন্ধানের তৃতীয় দিনে কানাডীয় উড়োজাহাজ সাবমেরিন নিখোঁজ হওয়া এলাকায় পানির তলদেশে একধরনের শব্দ শনাক্ত করে। পরে তা যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডকে জানানো হয়।
টাইটানিক জাহাজটি ১৯১২ সালে সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক আসার পথে একটি বরফ খণ্ডের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। এটি ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে বড় জাহাজ এবং প্রথম যাত্রাও তা শেষ করতে পারেনি। ওই দুর্ঘটনায় জাহাজে থাকা ২ হাজার ২০০ যাত্রী এবং ক্রুদের মধ্যে ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। ১৯৮৫ সালে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে এ নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু হয়।