হামাসের কাছ থেকে জিম্মিদের উদ্ধারে দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে যেতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) পার্লামেন্টে দেওয়া এক বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।
পার্লামেন্টে এমপিরা দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতির দাবিতে সরব হন। তারা বাকি জিম্মিদের উদ্ধারে বর্তমান যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার পরিকল্পনা জানতে চাইলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এ ব্যাপারে আমরা এখনই কিছু বলতে পারছি না। কারণ, ইসরায়েলি বাহিনীর ফিল্ড কমান্ডারা বলেছে বর্তমানে তাদের মিশন যে পর্যায়ে রয়েছে, তাতে এখনই যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সই করার সময় আসেনি।”
নেতানিয়াহু আরও বলেন, “কামান্ডাররা আমাকে আরও বলেছেন, এই মুহূর্তে যদি কোনো চুক্তি হয়, তাহলে তা তাদের মিশনের জন্য ক্ষতিকর হবে। আমরা কেউই চাই না গাজায় সামরিক অপারেশন বাধাগ্রস্ত হোক। কারণ এর সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তার প্রশ্ন সরাসরি যুক্ত। তবে আমাদের সেনা সদস্যরা জিম্মিদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। হামাসের তাছ থেকে জিম্মিদের মুক্ত করা চলমান মিশনের প্রধান লক্ষ্য।”
গত ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলায় ইসরায়েলের ১ হাজার ২০০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এ পাল্টা জবাবে ইসরায়েল ওই দিনই গাজার বিমান হামলা চালায়। প্রায় আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে চলা এ হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যার প্রায় ৭০ শতাংশ নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। ইসরায়েলের এ হামলায় আহত হয়েছেন প্রায় ৫২ হাজার ৫৮৬ জন আহত হয়েছেন এবং এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৬ হাজার ৭০০ জন ফিলিস্তিনি।
পাশাপাশি ইসরায়েল থেকে ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের জিম্মি করে নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা। এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৬ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন।
টানা দেড় মাস ভয়াবহ যুদ্ধ শেষে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত ২৫ নভেম্বর অস্থায়ী বিরতি ঘোষণা করে হামাস ও ইসরায়েল। পরে ১ ডিসেম্বর দুই পক্ষের পারস্পরিক হামলার শুরুর মধ্যে দিয়ে শেষ হয় সেই বিরতি।
সাত দিনের অস্থায়ী বিরতির সময় নিজের কব্জায় আটক জিম্মিদের মধ্যে থেকে ১১৮ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস; বিপরীতে এই সময়সীমায় ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ১৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে।
এদিকে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক দল লিকুদ পার্টির এক বিবৃতিতে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সফরের কথা বলা হয়। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সামনের দিনগুলোতে গাজায় অভিযান আরও ব্যাপক ও তীব্র হবে বলে জানান তিনি। সূত্র : এএফপি