গাজা থেকে ফিরে আসা অনেক ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করছেন। গাজায় হত্যাযজ্ঞ আর ভয়াবহতা দেখে মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন তারা। আর এজন্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আর এই যুদ্ধকে দুষছে তাদের পরিবার। এমনকি ইসরায়েলি বাহিনীর বহু সেনাসদস্য এখন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকারকে বিশ্বাস করেন না।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসন। এ পর্যন্ত নিহত হয়ে ৪২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
এদিকে গাজা থেকে ফেরার পর ইসরায়েলি সেনারা ভুগছেন মানসিক অবসাদসহ পিটিএসডিতে। কেউ কেউ বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ। গাজায় লড়াই করা ইসরায়েলি সেনারা সিএনএনকে জানানা, উপত্যকাটিতে তারা যে ভয়াবহতা দেখেছেন, তা বাইরের মানুষ কল্পনাও করতে পারবেন না। অনেকে মাংস খেতে পারছেন না গাজায় রক্তাক্ত মরদেহের কথা ভেবে। আবার অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারছেন না। এ থেকে উপত্যকাটিতে চলমান নৃশংসতা সম্পর্কে একটা আঁচ পাওয়া যায়।
চার সন্তানের বাবা ইসরায়েলি সেনা এলিরান মিজরাহি গাজায় আহত হয়ে ইসরায়েলে ফেরেন। গাজায় যুদ্ধ করতে গিয়ে এলিরান যা দেখেছিলেন, তাতে মানসিকভাবে বড় আঘাত পান। ফেরার পর চরম অবসাদে ভুগছিলেন। পিটিএসডির চিকিৎসা নেন। কিন্তু পুনরায় গাজায় পাঠানোর আগে আত্মহত্যা করেন তিনি।
ইসরায়েলি বাহিনীর হিসেব অনুযায়ী, গত বছর ৭ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১১ মে পর্যন্ত ১০ জন ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছেন।
গাজা যুদ্ধ থেকে ফেরা এক–তৃতীয়াংশ ইসরায়েলি সেনাই মানসিক স্বাস্থ্য–সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন। গত আগস্টে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায় , প্রতি মাসে এক হাজারের বেশি আহত সেনাসদস্যকে চিকিৎসার জন্য ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।তাঁদের ৩৫ শতাংশ নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অভিযোগ করেছেন। তবে এই সেনাদের ২৭ শতাংশের অবস্থা উন্নতির দিকে।
গাজায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের মুখোমুখি হলে ইসরায়েলি সেনারা নৈতিকভাবে এক ধরনের দোটানার মধ্যে পড়েন বলে জানিয়েছেন আইডিএফের এক চিকিৎসক।
আবার গাজার পর এখন অনেক সেনাকে লেবাননে পাঠানো হতে পারে—যা নিয়ে ভীত তারা। ইসরায়েলি বাহিনীর বহু সেনাসদস্য এখন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকারকে বিশ্বাসও করেন না।