সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনের ভোট ৪ জুন ভোট গণনা করা হয়। ক্ষমতাসীন বিজেপি এককভাবে ২৪০ আসন পেয়েছে। সরকার গঠনের জন্য দরকার ২৭২ আসন। ফলে দলটি এককভাবে সরকার গঠন করতে পারছে না।
নতুন সরকার গঠনে নিজেদের রাজনৈতিক জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) শরিকের সমর্থন পেয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অন্ধ্র প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর ও নীতীশ কুমার।
বুধবার (৫ জুন) নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি হাইকমান্ডের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে শরিক দলগুলোর। বৈঠক শেষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বিবৃতিতে বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদিকেই সর্বসম্মতিক্রমে জোটের নেতা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মোদি।
বস্তুত এবারের নির্বাচনে জয়ের সুবাদে টানা তৃতীয়বার নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন। এনডিএর সব দলের পক্ষ থেকে তাকে সমর্থন নিশ্চিত হয়েছে বলে বুধবারের বিবৃতিতে জানিয়েছে বিজেপি।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা ২১ নেতার মধ্যে রয়েছেন তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) নেতা এন চন্দ্রবাবু নাইডু এবং জনতা দল ইউনাইটেডের (জেডিইউ) এক প্রতিনিধির নাম। নতুন সরকার গঠনের জন্য লোকসভায় প্রয়োজনীয় ২৭২ আসন নিশ্চিত করতে এই দুটি দলের সমর্থন বিজেপির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বুধবার (৫ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে যে বিবৃতি পোস্ট করেছে বিজেপি, তা বিশ্লেষণ করে রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, সরকার গঠন করতে শরিকদের পাশে পাওয়ার ব্যাপারে বিজেপি`র আত্মবিশ্বাসে আর কোনো ঘাটতি থাকার কথা নয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “ভারতের দরিদ্র, নির্যাতিত, শোষিত, বঞ্চিত মানুষ এবং নারী, যুবক ও কৃষকদের সেবায় নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এর আগে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এক সভায় অংশ নেন জোট নেতারা। সেখানে তাদের বেশ নির্ভার দেখা যায়। কেউ কেউ তার সঙ্গে হাসি-খোশগল্পেও মেতে ওঠেন।
‘কিংমেকার’
টিডিপি ও জেডিইউ উভয় দলই কংগ্রেসের সাবেক মিত্র। নির্বাচনের মাস কয়েক আগে তারা নরেন্দ্র মোদির জোটে যোগ দেয়।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জনতা দল ইউনাইটেডের (জেডিইউ) প্রধান নীতীশ কুমার একটা সময়ে বিজেপির জোট সঙ্গী থাকলেও তিনি কয়েক বছর আগে এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন এবং বিজেপি-বিরোধী দলগুলোকে নিয়ে ‘ইনডিয়া’ জোট গঠনের অন্যতম কারিগরও ছিলেন তিনি।
তবে এ বছরের জানুয়ারিতে আবারও জোট বদল করে এনডিএতে যোগ দেন তিনি। বিহারে এখন এনডিএ জোটের সঙ্গে সরকার চালাচ্ছেন নীতীশ এবং লোকসভা নির্বাচনেও এই জোটে শামিল ছিল তার দল।
জেডিইউ বিহারে ১২টি আসন জিতেছে, এতটা তারা প্রত্যাশা করেননি। আবার বিজেপিও সে রাজ্যে ১২টি আসন পেয়েছে।
অন্ধ্র প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলুগু দেশম পার্টি বা টিডিপি পেয়েছে ১৬টি আসন। নীতীশ কুমারের মতো চন্দ্রবাবু নাইডুও কিছুদিন আগে পর্যন্ত মোদি সরকারবিরোধী অবস্থানে ছিলেন।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বের হওয়ার পরে এই দুই নেতাই এখন হয়ে উঠেছেন ‘কিংমেকার’। আঞ্চলিক দলগুলোর পক্ষে চমক দেখানো অসম্ভব কিছু নয়। তবে আপাতত জোটের মধ্যে সব ঠিক আছে বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। সূত্র : বিবিসি