গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ফলেই পৃথিবীর তাপমাত্রা এতটা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এমনটাই বলছেন আবহাওয়াবিদরা। পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত নির্ভরযোগ্য যেসব রেকর্ড রাখা হয়েছে, সেই অনুযায়ী সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে।
ডেথ ভ্যালি ক্যালিফোর্নিয়া ও নেভাদা সীমান্তে অবস্থিত। বিশ্বের সবচেয়ে তাপমাত্রা বিরাজ করে ডেথ ভ্যালির মরুভূমিতে। এটি বিশ্বের অন্যতম উষ্ণ স্থান হিসেবে পরিচিত। মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকাতে কেবল কয়েকটি মরুভূমি আছে। যেখানে গ্রীষ্মে তাপমাত্রায় শীর্ষে পৌঁছায়।
১৯১৩ সালের হিসাব অনুযায়ী ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের তাপমাত্রা ৫৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১৩৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট হয়েছিল। যদিও হাড় কাঁপানো শুষ্ক বাতাস ফার্নেস ক্রিকের বৈশিষ্ট্য। আমেরিকার ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসও এই তাপমাত্রার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। আমেরিকার পশ্চিম উপকূলজুড়ে তাপপ্রবাহ চলতে থাকায় এই এলাকার তাপমাত্রা বরাবর বাড়তেই থাকে।
ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে কর্মরতরা বলেন, “আপনি যখন বাইরে যাবেন, মনে হবে যেন আপনার মুখে অনেকগুলো হেয়ার ড্রায়ারের গরম বাতাস এসে পড়ছে।”
তাদের মতে, “এখানে এত গরম যে, আপনার গায়ে যে ঘাম হচ্ছে তা আপনি টেরই পাবেন না। কারণ খুব দ্রুত এটি বাষ্প হয়ে উবে যাচ্ছে। ঘামে যখন কাপড় ভিজে যায়, সেটা টের পাওয়া যায়, কিন্তু গায়ের চামড়ায় ঘাম শুকিয়ে যায় খুব দ্রুত। এই বিষয়টিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে আমার সময় লেগেছে।”
ডেথ ভ্যালি এক বিস্তীর্ণ মরুভূমি। মাঝে মাঝে বালিয়াড়ি আর গভীর খাদ রয়েছে। পার্শ্ববর্তী রাজ্য নেভাডা পর্যন্ত বিস্তৃত। বিশ্বের উষ্ণতম জায়গা হওয়ার পরও এই জায়গাতে থাকে কয়েক শ মানুষ।
ডেথ ভ্যালির লোকজনের বাড়িতে এয়ার কন্ডিশনিংয়ের ব্যবস্থা আছে। এটি তাদের ঘর ঠান্ডা রাখে। কাজেই ঘুমাতে অসুবিধা হয় না। তবে বিদ্যুৎ যদি চলে না যায়। যখন প্রচণ্ড গরম পড়ে, তখন সবাই সারাক্ষণ এয়ারকন্ডিশনিং চালিয়ে ঘর ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করে। তখন বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা তৈরি হয়।
বিশ্বের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১৯৩১ সালে তিউনিসিয়াতেও। তবে ঔপনিবেশিক সময়ে আফ্রিকার অন্যান্য এলাকার মতো এই তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এছাড়া বিশ্বের অনেক স্থান আছে যেখানে তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ৫৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত।
সূত্র: বিবিসি, সিবিএস নিউজ