বিশ্বের প্রাচীনতম সংবাদপত্রগুলোর মধ্যে একটি অস্ট্রিয়ার ‘উইনার জেইতুং’। ১৭০৩ সালে প্রকাশিত পত্রিকাটির নামকরণ করা হয়েছিল “উইনারিসেস ডায়ারিয়ামের’ নামানুসারে। পরে ১৭৮০ সালে “উইনার জেইতুং নামকরণ করা হয়। ১৮৫৭ সালে তৎকালীন সম্রাট ফ্রাঞ্জ জোসেফের আমলে পত্রিকাটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন হয়। এটিই ছিল অস্ট্রিয়ার প্রথম সরকারি পত্রিকা।
তবে প্রকাশের ৩২০ বছর পর পুরনো এই সংবাদপত্র অনলাইনে প্রকাশ করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্টে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩২০ বছরের পুরনো এ পত্রিকা বন্ধ করে অনলাইনে প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পত্রিকাটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অস্ট্রিয়া সরকার এবং সংবাদপত্রের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিরোধ চলছিল। এ সিদ্ধান্তের ফলে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিরোধের অবসান ঘটল।
শতাব্দীর প্রাচীন এ পত্রিকার ছাপানো বন্ধে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার রাস্তায় শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেছেন।
ট্রেড ইউনিয়নের তথ্য অনুযায়ী, পত্রিকাটিতে বর্তমানে ২০০ এর বেশি কর্মী রয়েছেন। তাদের অর্ধেককে ছাঁটাই করা হবে। যাদের মধ্যে ৪০ জন সাংবাদিক।
পার্লামেন্টের তৃতীয় প্রেসিডেন্ট নরবার্ট হফার বলেন, “সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ওপর ভিত্তি করে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আগামী ১ জুলাই থেকে প্রাথমিকভাবে পত্রিকাটি অনলাইনে পাওয়া যাবে। এ জন্য নতুন একটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।”
ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন অব নিউজ পাবলিশার্স জানিয়েছে, দ্য উইনার জেইতুং পত্রিকাকে বিশ্বে মুদ্রিত প্রাচীন সংবাদপত্র হিসেবে ২০০৪ সালে অভিহিত করা হয়। এখনও বিশ্বের প্রচলিত প্রাচীনতম সংবাদপত্রগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে রয়েছে।
ইউরোপীয় কমিশনের (ইইউ) ভাইস প্রেসিডেন্ট ভেরা জুরোভা বলেছেন, পত্রিকাটির বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি খুশি নন। বছরের পর বছর ধরে মানুষকে তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে উইনার জেইতুং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
পত্রিকাটি উপব্যবস্থাপনা সম্পাদক মাথিয়াস জিয়েগলার বলেন, “অনেকেই ভয় পাচ্ছেন যে সরকার উইনার জেইতুং এর ৩২০ বছরের পুরনো ইতিহাসকে ব্র্যান্ড হিসেবে রাখতে চায়। যদিও পত্রিকাটির ভবিষ্যতের প্রকাশনা কেমন হবে, তা কেউ জানে না। এমনকি পত্রিকাটিতে আদৌ প্রকৃত সাংবাদিকতা করা সম্ভব হবে কি না, সেটি নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে।”