পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকে সাইফার মামলায় বেকসুর খালাস দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট।
সোমবার (৩ জুন) প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক ও বিচারপতি মিয়াঙ্গুল হাসান আওরঙ্গজেবের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন।
সাইফার মামলায় সাজার বিরুদ্ধে আপিলের সংক্ষিপ্ত রায়ে সাজা বাতিল করে তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
এ সময় ইসলামাবাদ হাইকোর্টে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ইমরান খানের বোন এবং শাহ মাহমুদ কুরেশির স্ত্রী ও কন্যারাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ের পর পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর বলেন, পাকিস্তান ও পাকিস্তানের ২৫ কোটি মানুষের জন্য আজ একটি খুশির দিন।
তিনি আরও বলেন, একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও ভিত্তিহীন মামলার অবসান হয়েছে।
উল্লেখ্য, সাইফার মামলায় পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ও শাহ মাহমুদ কুরেশিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছিল বিশেষ আদালত।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে করা সাইফার মামলা মূলত গোপন এক কূটনৈতিক নথি বা তারবার্তার সঙ্গে সম্পর্কিত। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত মাজিদ ইসলামাবাদে ইমরান খানের সরকারের কাছে একটি গোপন নথি পাঠিয়েছিলেন। আর সেই নথির বিষয়বস্তু প্রকাশ্যে এনেছিলেন পিটিআইয়ের এ প্রতিষ্ঠাতা।
নথিতে ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির প্রমাণ আছে বলে দাবি করে পিটিআই। ইমরান খান রাষ্ট্রীয় গোপনীয় এই নথি নিজের কাছে রেখেছিলেন এবং এর বিষয়ব্স্তু জনসম্মুখে তুলে ধরেছিলেন।
পাকিস্তানে এই বিতর্কের শুরু হয় ২০২২ সালের ২৭ মার্চ; ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার মাত্র এক মাস আগে। এক জনসমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সামনে একটি চিঠি প্রদর্শন করেন। এ সময় তিনি দাবি করেন, একটি দেশের কাছ থেকে আসা সাইফার এটি।
পিটিআইয়ের সরকারকে উৎখাত করার জন্য ইমরান খানের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করছে সেই দেশটি; যার প্রমাণ চিঠিতে আছে।
তিনি চিঠির বিষয়বস্তু খোলামেলাভাবে প্রকাশ করেননি বা এটি কোন দেশ থেকে এসেছে তা প্রকাশ করেননি। যদিও তার বক্তৃতায় চিঠির বিষয়বস্তুর ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।
কিন্তু এপ্রিলের ১০ তারিখ বিরোধী এমপিদের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কয়েকদিন পর এক জনসভায় ইমরান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের প্রধান ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে সেই দেশের পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের একটি বৈঠক হয়েছিল এবং সেই বৈঠকে ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে প্রস্তাব করেছিলেন তিনি।