কয়েক বছর ধরে চরম অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে পাকিস্তান। এই সংকট থেকে উত্তরণে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করছে দেশটি। এর মধ্যে একটি ‘গাঁজা চাষ’। শুধু তা-ই নয়, গাঁজা-বাণিজ্যের জন্য বৈধ ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করছে দেশটি।
বুধবার (৮ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে বিকাশমান বাজারের সুযোগ নিতে চাইছে পাকিস্তান। এর ধারাবাহিকতায় প্রায় চার বছর আগে শিল্প খাতে গাঁজা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল দেশটি। এ জন্য গেল ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্সিয়াল আদেশের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো গাঁজা নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০২০ সালে দেশটিতে গাজা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হলেও অভ্যন্তরীণ জটিলতায় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠনের পদক্ষেপ থেমে ছিল।
পাকিস্তানের বিশেষ বিনিয়োগ সুবিধা কর্তৃপক্ষের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, “আমরা এ উদ্যোগ নিয়ে খুব তৎপর। সবকিছু খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। নতুন জোট সরকার নীতি, উৎপাদনকারী ও বিক্রেতাদের লাইসেন্স প্রদান ও চাষের অঞ্চল নির্দিষ্ট করতে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠন করেছে।”
এদিকে ভারতের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, পাকিস্তান বৈশ্বিক গাঁজার বাজারে প্রবেশ ও উৎপাদনের অনুকূল পরিবেশের সদ্বব্যবহারে আগ্রহী। ২০২২ সালে গাঁজার বৈশ্বিক বাজার ছিল ২৭ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার। ২০২৭ সালে এ বাজার বেড়ে ৮২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। দেশটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং অন্যান্য বিদেশি ঋণ সহায়তা পেতে রপ্তানি আয় ও কর বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে গাজার উন্মুক্ত চাষ এবং বিক্রি হয়ে থাকে। এ গাছটি উত্তর ও পশ্চিম পাকিস্তানে চাষের পরিবেশ রয়েছে। ১৯৭০-এর দশকে স্থানীয় গাঁজার দোকানগুলো বেশ জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু ১৯৮০-এর দশকে সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউল হক গাঁজার ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন।
নতুন করে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠনের ফলে চিকিৎসায় গাজার ব্যবহারের সুযোগ বাড়বে। এ ছাড়া এ গাছ রশি, কাপড়, কাগজ এবং নির্মাণসামগ্রীতেও ব্যবহার করা হয়।
পাকিস্তানে গাঁজার অপব্যবহার রোধে কঠোর শাস্তির বিধানও করা হয়েছে। এ আইন লঙ্ঘন করলে কোম্পানিকে ২০ কোটি রুপি এবং ব্যক্তিকে এক কোটি রুপি পর্যন্ত জরিমানার বিধার রাখা হয়েছে।