যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭। শক্তিশালী এই কম্পনের পর তাৎক্ষণিকভাবে সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও পরে তা বাতিল করা হয়।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে শক্তিশালী ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। পরে প্রাথমিকভাবে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া ও দক্ষিণ ওরেগন উভয় উপকূলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়। এই অঞ্চলে প্রায় ৪৭ লাখ মানুষ বাস করেন।
বিবিসি বলছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলটি ছিল সান ফ্রান্সিসকো থেকে প্রায় ২৬০ মাইল (৪১৮ কিলোমিটার) উত্তরে অবস্থিত হামবোল্ট কাউন্টির ছোট শহর ক্যালিফোর্নিয়ার ফার্ন্ডেল শহরের কাছে কাছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, এই ভূমিকম্পের পর কোনো মৃত্যু বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
হামবোল্ট কাউন্টি শেরিফের অফিস সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে, ভবন বা অবকাঠামোর কোনো বিপর্যয়কর ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, তবে কিছু বাড়িতে সামান্য ক্ষতি হয়েছে। শেরিফের অফিস জানিয়েছে, এলাকার বেশ কয়েকটি দোকানে জিনিসপত্র তাক থেকে পড়ে গেছে এবং অনেক বাসিন্দা অল্প সময়ের জন্য বিদ্যুৎ পরিষেবার বাইরে ছিলেন।
পর্যবেক্ষণ সাইট পাওয়ারআউটেজ.ইউএসর তথ্যমতে, ভূমিকম্পের পর হামবোল্ট কাউন্টিতে ১০ হাজারের বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন ছিলেন।
যদিও এই ভূমিকম্পে ব্যাপক কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, তারপরও ফার্ন্ডেলের একজন বাসিন্দা ভূমিকম্পের কয়েক মিনিটের মধ্যে বিবিসির সঙ্গে কথা বলার সময় জানান, তিনি যে বিল্ডিংটিতে ছিলেন তার ভেতরে “মনে হচ্ছিল প্রতিটি ঘরে একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে”।
ফার্ন্ডেলের জিঞ্জারব্রেড ম্যানশন ইনের সরাইখানার রক্ষক অলিভিয়া কোবিয়ান বলেন, সরাইখানার ভেতরটা এখন “যুদ্ধক্ষেত্রের মতো”। তার ভাষায়, “আমাদের কাছে বিশাল ঢালাই লোহার অগ্নিকুণ্ড রয়েছে যেগুলো ওপরে তোলা হয়েছে এবং সরানো হয়েছে, সবকিছু ভেঙে পড়েছে।”
ভূমিকম্পের আরেক প্রত্যক্ষদর্শী টড ডুনাওয়ে ভূমিকম্পের সময় ক্যালিফোর্নিয়ার ফরচুনায় তার বাড়িতে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন।
তিনি বিবিসিকে বলেন, “এটা আক্ষরিক অর্থেই মনে হচ্ছিল যেন একটা বিশাল পানির বিছানায় দাঁড়িয়ে আছি। জানালার খটখট আওয়াজ, দেয়াল ভেঙে পড়া, থালা-বাসন ও সাজসজ্জা ভেঙে পড়ছিল এবং যতটা ঘটছে তার মধ্যে ভীতিও কাজ করেছে।”
ডুনাওয়ে বলেন, তিনি এবং তার স্ত্রী ১৫ মিনিটের জন্য আতঙ্কে কাঁপছিলেন। মূলত পরে আরও বড় আফটারশক হবে কি না, তা দেখার অপেক্ষায় ছিলেন তারা।