ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আলফ্রেড। অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়টি। এ কারণে দেশটির সরকার উপকূলের হাজার হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
ঝড়টি শনিবার ব্রিসবেনের উত্তরে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া ব্যুরো। আলফ্রেডের ধীর গতির কারণে দীর্ঘ সময় ধরে ভারি বৃষ্টি, শক্তিশালী বাতাস, বিশাল ঢেউ এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই বেশকিছু উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়েছে এবং কয়েকটি বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্র ও জরুরি সতর্কতা
কুইন্সল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্রিসাফুলি বলেছেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে রাখা হয়েছে। ঝড়ের গতিপথের মধ্যে থাকা সবাইকে নিজ নিজ নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দিচ্ছি। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে বন্ধু বা পরিবারের কাছে চলে যান। আগে থেকেই নিরাপদ স্থানে সরে যান।
প্রবল ঝড় ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট
এদিকে ঘূর্ণিঝড় আলফ্রেডের প্রভাবে কুইন্সল্যান্ড ও নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ১০০ কিমি/ঘণ্টা (৬২ মাইল/ঘণ্টা) গতিবেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। ব্রিসবেন থেকে ১২০ কিমি (৭৫ মাইল) পশ্চিমে এবং গোল্ড কোস্ট শহর থেকে ৮৫ কিমি (৫৩ মাইল) দূরে অবস্থান করছে ঝড়টি।
এই ঝড়ের কারণে ৮০,০০০-এর বেশি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে, যার মধ্যে অর্ধেকই গোল্ড কোস্ট এলাকায়।
বন্যার প্রভাব
এদিকে আলফ্রেডের প্রভাবে গত ৪৮ ঘণ্টায় নিউ সাউথ ওয়েলসের কিছু এলাকায় ৪০০ মিমি (১৬ ইঞ্চি) বৃষ্টি হয়েছে, যা পুরো মার্চ মাসের গড় বৃষ্টিপাতের চেয়ে বেশি। লিসমোর শহরের ব্যবসায়ী থমাস গফ বলেন, এটা সাধারণত বসবাসের জন্য সুন্দর জায়গা। কিন্তু প্রতি পাঁচ বছর পরপরই একবার ‘শতাব্দীর ভয়াবহ ঝড়’ দেখা যাচ্ছে!
পরিবহণ বন্ধ ও সতর্কতা
ঘূর্ণিঝড় আলফ্রেডের প্রভাবে ব্রিসবেন বিমানবন্দর বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ।সর্বমোট ১,২৮০টি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজে জনগণকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘এটা দেখার সময় নয়। সবাই ঘরে থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন’। অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১২০ জন সদস্য উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করবে।
অস্বাভাবিক ঘূর্ণিঝড়
ব্রিসবেনে সর্বশেষ বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল ১৯৭৪ সালে। ১৯৯০ এবং ২০১৯ সালেও দুটি ঝড় কাছাকাছি এসেছিল। তবে তা উপকূলে সরাসরি আঘাত করেনি।
সতর্কতা ও নিরাপত্তার জন্য অস্ট্রেলিয়া সরকার সব নাগরিককে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছে। সূত্র: রয়টার্স