• ঢাকা
  • বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩০, ১১ রমজান ১৪৪৬

মাদ্রাসায় বিপুল বরাদ্দ দিল রাজ্য সরকার, পড়ছে অমুসলিমরাও


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫, ১১:০৪ এএম
মাদ্রাসায় বিপুল বরাদ্দ দিল রাজ্য সরকার, পড়ছে অমুসলিমরাও
ছবি : সংগৃহীত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য বাজেটে বিপুল বরাদ্দ ঘোষণা করেছে। রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামোর অন্যতম অংশ মাদ্রাসা। সংখ্যালঘু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর ধরে বিকল্প ধারা হিসেবে চলে আসছে। তার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবারের রাজ্য বাজেটে।

ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরির পাশাপাশি তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এর বাইরেও রাষ্ট্রের অনুমোদন ও প্রত্যক্ষ অনুদানে অনেক মাদরাসা চলে। এই শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকীকরণকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হয়েছে বাজেটে।

বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৬০০টি নতুন মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার কথা বলেছিলেন। সেই ধারায় পশ্চিমবঙ্গের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বুধবার ঘোষণা করেছেন, মাদরাসা পরিকাঠামো আরও আধুনিক করা হবে। উন্নত করা হবে পঠন-পাঠনের মানও।

এবারের বাজেটে সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের জন্য পাঁচ হাজার ৬০২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব রয়েছে। বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী, মাদরাসা পরিকাঠামোর খোলনলচে বদলে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আরও বেশিসংখ্যক মাদ্রাসা গড়ে উঠবে স্মার্ট ক্লাসরুম। সেখানে আধুনিক গ্যাজেটের মাধ্যমে পঠনপাঠন করানো হবে। এ জন্য থাকবে ই-বুক। একই সঙ্গে আরো বেশি মাদরাসায় কম্পিউটার ল্যাব গড়ে তোলার ভাবনা রয়েছে।

চলতি অর্থবর্ষে মাদরাসাগুলোতে ৬০০টি স্মার্ট ক্লাসরুম, ১০০টি ডিজিট্যাল ল্যাবরেটরি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। এর পাশাপাশি ৭৬টি মাদ্রাসার সায়েন্স ল্যাবের মানোন্নয়ন করা হবে। এই সংক্রান্ত অনুমোদন ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গে প্রথম শ্রেণির মাদ্রাসা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থারই অংশ। তবে চরিত্র অনুযায়ী একাধিক শ্রেণিতে ভাগ করা যায় এসব প্রতিষ্ঠান। সরকারি অনুমোদন ও অনুদান উভয়ই পায় এমন মাদ্রাসার সংখ্যা ৬১৪।

এর মধ্যে হাই মাদ্রাসা ৫১২টি, সিনিয়র মাদরাসা ১০২টি রয়েছে। হাই মাদ্রাসার মধ্যে ১২টি জুনিয়র হাই মাদরাসা। এসব হাই মাদরাসা পরিচালনা করে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। অন্যান্য মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের মতো পঠনপাঠনের সঙ্গে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ইসলাম ধর্ম ও আরবি ভাষা শিক্ষার সুযোগ এখানে আছে।

তবে হাই মাদ্রাসায় উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ইসলামিক শিক্ষার সুযোগ নেই। এই পর্যায়টি উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ পরিচালনা করে। ২১০টি হাই মাদরাসাকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রসা শিক্ষা পর্ষদের হিসেব অনুযায়ী, অনুমোদিত ৬১৪টি মাদরাসার মধ্যে ৫৫৪টিতে ছেলে-মেয়ে একসঙ্গে পড়ে। ৫৭টি মাদরাসা শুধু মেয়েদের জন্য, তিনটি শুধু ছেলেদের জন্য। ১৭টি মাদরাসা উর্দু মাধ্যমের। অনুমোদিত মাদরাসার মধ্যে ১৮৩টিতে বৃত্তিমূলক শিক্ষা দেওয়া হয়। এই দিকটি পরিচালনা করে কারিগরি শিক্ষা দপ্তর।

কলকাতায় সরকার স্বীকৃত ও অনুদানপ্রাপ্ত মাদরাসা ৯টি। এর মধ্যে ৮টি হাই মাদ্রাসা, একটি সিনিয়র মাদ্রসা। মাদ্রাসা মানে শুধু সংখ্যালঘু পড়ুয়ারা সেখানে পড়াশোনা করে না। অমুসলিম অন্যান্য সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরাও সেখানে পড়ে। এমন মাদ্রাসা পশ্চিমবঙ্গে আছে যার অর্ধেকের বেশি পড়ুয়া অমুসলমান পরিবারের।

সরকারের অনুমোদন ও পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া হাজার হাজার মাদ্রসা পশ্চিমবঙ্গে চলছে এর সঠিক সংখ্যাও জানা যায় না। এগুলোকে বলে খারিজি মাদ্রাসা। বেসরকারি হিসেবে 
প্রায় ৬ হাজার এমন মাদ্রাসা রয়েছে।

Link copied!