ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা বাবা সিদ্দিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার (১২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় ছেলে জিশানের অফিসের কাছে তিনি গুলিবিদ্ধি হন।
সূত্রের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, শনিবার মুম্বাইয়ের বান্দ্রা পূর্ব এলাকার নির্মল নগরে নিজের অফিস থেকে বের হয়ে গাড়িতে ওঠার সময় তাকে লক্ষ্য করে তিন রাউন্ড গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন সিদ্দিকি। এর মধ্যে চারটি গুলি বাবা সিদ্দিকের শরীরের বিদ্ধ হয়। তার একজন সহযোগীর শরীরেও দুটি গুলি লাগে। পরে বাবা সিদ্দিককে উদ্ধার করে দ্রুত মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬৬ বছর বয়সী এই নেতার মৃত্যু হয়।
কী কারণে এই হামলার ঘটনা তা এখনো জানা যায়নি। তবে এ পর্যন্ত এই হামলায় সন্দেহেভাজন হিসেবে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ তাদের পরিচয় প্রকাশ করেনি।
মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী ও এনসিপির প্রধান অজিত পাওয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এ ঘঠনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “বাবা সিদ্দিকের মৃত্যুতে আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। তিনি আমার ভালো বন্ধু ও সহকর্মী ছিলেন। আমরা এমন একজন নেতাকে হারিয়েছি, যিনি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য লড়াই করে গেছেন এবং ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়ে ছিলেন আপসহীন। এ হামলা পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা হবে।”
মুম্বাই পুলিশ কমিশনার বিবেক ফাঁসালকার বলেছেন, “হত্যাকাণ্ডটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার পেটে তিনটি গুলি লেগেছে।”
এদিকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেও এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে। তাদের একজন উত্তর প্রদেশ ও আরকেজন হরিয়ানার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।”
এনসিপির (এসপি) নেতা শারদ পাওয়ার বলেছেন, “মহারাষ্ট্রে যেভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে তা উদ্বেগজনক।”
মহারাষ্ট্রের বান্দ্রা পশ্চিম নির্বাচনী এলাকা থেকে তিনবার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন বাবা সিদ্দিক। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিলাসরাও দেশমুখের অধীনে ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি খাদ্য ও বেসামরিক সেবা সরবরাহ এবং শ্রম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ভারতের বর্তমান প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের রাজনীতির সঙ্গে তিনি প্রায় পাঁচ দশক যুক্ত ছিলেন। যুব কংগ্রেসের মাধ্যমে রাজনীতিতে তার হাতেখড়ি। কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি এনসিপিতে যোগ দিয়েছিলেন।