লিবিয়ায় কার্যকরী আবহাওয়া সতর্কতা ব্যবস্থা থাকলে বন্যায় হাজার হাজার হতাহতের ঘটনা এড়ানো যেত বলে জানিয়েছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও)। এখন পর্যন্ত বন্যায় লিবিয়াতে ৬ হাজার মানুষ নিহত ও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিঁখোজ বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। খবর আল-জাজিরার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জেনেভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডব্লিউএমও-এর মহাসচিব পেটেরি তালাস বলেন, বন্যায় হাজার হাজার মানুষ মারা যাওয়া ও অসংখ্য মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার পরিস্থিতি পরিচালনার ক্ষেত্রে লিবিয়ার প্রধান চ্যালেঞ্জ হল শাসনব্যবস্থা ‘সাধারণভাবে কাজ করছে না’।
তিনি আরও বলেন, “যদি তাদের একটি কার্যকরী আবহাওয়া পরিষেবা থাকত, তবে তারা একটি সতর্কতা জারি করতে পারত। জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ লোকজনকে সরিয়ে নিতে সক্ষম হতো। এবং আমরা বেশিরভাগ মানুষের হতাহতের ঘটনা এড়াতে পারতাম।”
সংস্থাটি এর আগে আবহাওয়া ব্যবস্থা ঠিক করার জন্য লিবিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঝুঁকির কারণে এটি আবহাওয়া ব্যবস্থা নিয়ে সংস্থাটি কাজ করতে পারেনি।
পেটেরি তালাস বলেন, “যেহেতু দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভালো নয়, সেখানে গিয়ে কাজ করাটা কঠিন। ”
লিবিয়ার রাজনৈতিক বিভক্তির কারণে উদ্ধার ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম বেশ জটিল। ২০১১ সালে ন্যাটো-সমর্থিত বিদ্রোহে দেশটির নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে কোন শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার দেশটিতে ছিল না। ফলে সংঘাত লেগেই আছে।
বর্তমানে দেশটিতে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার কাজ করেছে। পশ্চিমে ত্রিপোলিতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জাতীয় ঐক্যের সরকার (জিএনইউ) এবং অন্যটি পূর্বে কাজ করে।
বন্যায় দুর্ভোগ ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, এতো বেশি সংখ্যক হতাহতের ঘটনা এড়ানো যেত কিনা তা নিয়ে।
লিবিয়ার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ শহর দেরনার নিরাপত্তা অধিদপ্তর ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিল। তাতে একজন স্থানীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে কারফিউ জারি করতে শোনা যায়। ঝড় ড্যানিয়েলের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর লোকজনকে বাড়িতে থাকতে বলছিলেন তিনি। ওই কর্মকর্তা ভিডিওতে বলেছেন, বাড়িতে থাকা ঝড়ের সময় সবচেয়ে নিরাপদ হবে।
ঝড় আঘাত হানার পর শহরের অব্যবস্থাপিত ও ঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করা বাঁধগুলো ভেঙে পড়ে। ফলে, বন্যায় মানুষের বাড়িঘর ডুবিয়ে দেয়।
লিবিয়ার অগণিত ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা করার জন্য একটি বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টা বৃহস্পতিবার চালু করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি দেশ চিকিৎসা থেকে সামরিক উপায়ে সহায়তা করছে।
লিবিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রশাসনও বন্যা দুর্গতদের সহায়তার জন্য সহযোগিতা করছে। বৃহস্পতিবার ত্রিপোলির একটি মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করেছে।