আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের বলখ প্রদেশে আইএসআইএস (আইএসআইএল, আইএস নামেও পরিচিত) এর ছয় সদস্যকে অভিযান চালিয়ে হত্যা করেছে তালেবান বাহিনী। তালেবানের মুখপাত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। আফগানিস্তানে আইএসআইএসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীটি আইএসকেপি নামে পরিচিত। তালেবান সরকার এই গোষ্ঠীকে দমন করতে শুরু থেকেই অভিযান চালিয়ে আসছে। কারণ আইএসকেপি আফগানিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত।
বলখের পুলিশ প্রধানের মুখপাত্র মোহাম্মদ আসিফ ওয়াজিরির বলেন, “সোমবার গভীর রাতে নাহরি শাহি জেলায় আইএসআইএলের একটি আস্তানাকে লক্ষ্য করে অভিযান শুরু হয়। এতে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির ছয় সদস্য নিহত হয়েছে।”
অন্যদিকে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানে এক এক করে মেয়েদের উচ্চশিক্ষা, খেলাধুলা, কর্মসংস্থানসহ অনেক অধিকারই কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তালেবান শাসনে কঠোর নজর রাখা হচ্ছে আফগান নারীদের ওপর।
এর আগে পবিত্র রমজান মাসে ‘গান’ সম্প্রচারের অভিযোগে আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নারীদের পরিচালিত একটি রেডিও স্টেশন বন্ধ করে দিয়েছে তালেবান সরকার। একজন তালেবান কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বন্ধ করে দেওয়া ওই রেডিও স্টেশনের নাম সাদাই বানোওয়ান। যার অর্থ নারীর কণ্ঠ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাসে গান বাজানোর জন্য ওই রেডিও স্টেশনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটি দেশটির একমাত্র নারী পরিচালিত রেডিও স্টেশন। ১০ বছর আগে কার্যক্রম শুরু করা এই রেডিও স্টেশনের আটজন কর্মী রয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জন নারী।
যদিও দেশটিতে গানের ওপর কোনো সরকারি নিষেধাজ্ঞাও নেই।
আফগানিস্তানের বাদাখশান প্রদেশের তথ্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক পরিচালক মোয়েজুদ্দিন আহমাদি বলেছেন, রেডিও স্টেশনটি রমজান মাসে গান ও সংগীত সম্প্রচার করে ‘ইসলামিক আমিরাতের আইন ও বিধি’ বেশ কয়েকবার লঙ্ঘন করেছে এবং এই কারণে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যদি ওই রেডিও স্টেশনটি ‘ইসলামিক আমিরাতের আইন ও বিধি’ মেনে নিয়ে এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না জানায় তাহলে সেটি আবার চালু করার অনুমতি দেওয়া হবে।
স্টেশনটি প্রধান নাজিয়া সরোশ বলেন, “কোনো ধরনের নীতি লঙ্ঘন হয়নি। তালেবানরা আমাদের বলেছে সংগীত সম্প্রচার হয়েছে। তবে আমরা কোনো ধরনের সঙ্গীত সম্প্রচার করিনি। স্টেশনটি বন্ধের কোনো প্রয়োজন ছিল না। এটি একটি ষড়যন্ত্র।”
২০২১ সালের আগস্টে তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর দেশটিতে অনেক সাংবাদিক তাদের চাকরি হারিয়েছেন। আফগান ইন্ডিপেন্ডেন্ট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’র মতে, তহবিলের অভাবে বা কর্মীরা দেশ ছেড়ে যাওয়ার কারণে মিডিয়া আউটলেটগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ ষষ্ঠ শ্রেণির বাইরের অধিকাংশ শিক্ষা ও চাকরি করার ওপর নারীদের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তালেবান।
যদিও ১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে নিজেদের পূর্ববর্তী শাসনের সময় তালেবান গোষ্ঠী দেশের বেশিরভাগ টেলিভিশন, রেডিও এবং সংবাদপত্র নিষিদ্ধ করেছিল।