স্বামী যদি দ্বিতীয় বারের জন্য প্রেসিডেন্ট হন, তাহলে মেলানিয়াও হবে দ্বিতীয় বারের মতো ফার্স্ট লেডি। এর আগে ২০২১ সালে হোয়াইট হাউস ছেড়ে গিয়েছিলেন তিনি। আবার স্বগৌরবে প্রবেশ করবেন সেখানে। মার্কিন এই নারী ফার্স্ট লেডি হওয়ার আগে ছিলেন মডেল। এরপর আলাপ ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। সেই আলাপ প্রেমের সম্পর্কে রূপ নেয়, তারপর বিয়ে।
কে এই মেলানিয়া
মেলানিয়া মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের ফার্স্ট লেডি হলেও তার জন্ম কিন্তু সেদেশে না। লুইসা অ্যাডামস এর পর তিনিই একমাত্র বিদেশে জন্মগ্রহণ করা ফার্স্ট লেডি।
মেলানিয়া ট্রাম্প ইয়োগোস্লাভিয়াতে (বর্তমানে স্বাধীন দেশ স্লোভেনিয়া) জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা রাষ্ট্রয়াত্ব যানবাহন তৈরির কারখানার গাড়ি ও মোটরসাইকেলের ডিলার ছিলেন এবং স্লোভেনীয় কমিউনিস্ট পার্টির একজন সদস্য ছিলেন। মা একটি বাচ্চাদের কারখানায় সেলাইয়ের কাজ করতেন।
১৬ বছর বয়স থেকেই মেলানিয়া ট্রাম্প তার মডেলিং পেশা শুরু করেন। তখনই তিনি নিউইয়র্কে আসেন। ১৯৯৮ সালে ম্যানহাটনে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় মেলানিয়ার। নব্বইয়ের দশকে ট্রাম্প একদম আলাদা মানুষ ছিলেন। ব্যবসা ও টিভি শো নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তখনও তিনি রাজনীতিতে ছিলেন না। যদিও তখন ট্রাম্পের ছিল নারীকেন্দ্রিক জীবন। চাহিদা ছিল শুধু আকর্ষণীয় নারীদের সংস্পর্শে থাকা। তারপর তাদের সম্পর্ক প্রেমের সম্পর্কে রূপ নেয়।
মেলানিয়া এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক জনসম্মুখে প্রকাশ পায় ২০০৪ এর পর ডোনাল্ডের ব্যবসায়িক রিয়েলিটি টেলিভিশন শো দ্য এপারেন্টিস চালুর পর। ২০০৫-এ ডোনাল্ড তাদের দীর্ঘ সম্পর্কের কথা বর্ণনা করে বলেন, আমাদের সরাসরি কোন চুক্তি ছিল নাহ, `লড়াই` শব্দটি ভুলে যাও ... আমরা খুব বেশি উপযুক্ত। আমরা একত্রে থাকবো। তারপর ২০০৫ সালেই তারা বিয়ে করেন।
২০০৬-এ মেলানিয়া একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন যার নাম ব্যারন ট্রাম্প। ছেলের সঙ্গে সময় কাটানোই এখন তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্প এবং মেলানিয়ার ছেলে ব্যারন ট্রাম্পের বয়স ১৮। শীঘ্রই তিনি নিউ ইয়র্কে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন।
ট্রাম্পের মতোই বিতর্ক থেকে দূরে নন মেলানিয়াও। বিজ্ঞাপনী মডেল হিসেবে মেলানিয়ার নগ্ন ছবি উঠে আসে সোশ্যাল মিডিয়ায়। হাতে হাতকড়া পরে একটি ব্রিফকেসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। এমনকি রিপাবলিকান কনভেনশনে ট্রাম্পের হয়ে নির্বাচনী প্রচারে দুর্দান্ত ভাষণ দিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল মেলানিয়া। অভিযোগ, মেলানিয়া যে বক্তৃতা করেছেন তা হুবহু মিশেল ওবামার ২০০৮-এর বক্তৃতার অংশবিশেষের নকল।
এদিকে গতবারে হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাবার সময় মেলেনিয়ার জনপ্রিয়তা কমেছিল। সিএনএনের ২০২১ সালের জানুয়ারীতে করা এক জরিপে দেখা যায়, মেলানিয়ার জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করেছে। আগে পছন্দ করত এমন মানুষের ৪৭ শতাংশ বেশি মানুষ মেলানিয়াকে অপছন্দ করার কথা জানিয়েছেন।
মেলানিয়া রাজনীতি না করলেও অনেক বেশি পড়াশোনা করেন। তিনি ট্রাম্প ও ট্রাম্প কন্যা ইভানকাকে নানা সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করেন। আর এজন্যই হয়ত দ্বিতীয় বারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রাক্কালে ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে রিপাবলিকান পার্টির প্রধান কার্যালয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে নির্বাচনে বিজয়ী ভাষণে স্ত্রী মেলেনিয়ার ভাষণে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হোন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসময় ট্রাম্প বলেন, তিনি (মেলানিয়া) দুর্দান্ত কাজ করেছেন। মানুষকে সাহায্য করার জন্য অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করেন তিনি।