জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের অন্যসব দেশের মতো বাংলাদেশেও অসহনীয় গরম পড়েছে। বিশেষ করে এপ্রিল থেকে জুন অবধি প্রচণ্ড গরমে পুড়েছে গোটা দেশ। বিজ্ঞানীদের একটি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি জুনে ৯ দিনের অস্বাভাবিক গরমে কাহিল হয়েছে দেশের ১৭ কোটিরও বেশি মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’-এর কয়েকজন বিজ্ঞানীর বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থার বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, চলতি বছরে যে তাপপ্রবাহ দেখা গেছে, তা প্রাকৃতিক নয়, অপ্রাকৃতিক। আগামীতে তাপপ্রবাহ বা প্রচণ্ড গরম কমার কোনো সুযোগ নেই। বরং অস্বাভাবিকভাবে বাড়তেই থাকবে। যেটাকে স্বাভাবিক হিসেবে ধরে নিতে হবে।
‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’ জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অসহনীয় গরম পড়েছে। ভয়াবহ গরমে চলতি জুন মাসে বিশ্বের ৫০০ কোটিরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এসব আক্রান্তের মধ্যে বাংলাদেশের রয়েছে ১৭ কোটি ১০ লাখ মানুষ।
এছাড়াও অন্যসব দেশের মধ্যে ভারতের ৬১ কোটি ৯০ লাখ, চীনের ৫৭ কোটি ৯০ লাখ, ইন্দোনেশিয়ার ২৩ কোটি ১০ লাখ, নাইজেরিয়ার ২০ কোটি ৬০ লাখ, ব্রাজিলের ১৭ কোটি ৬০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ১৬ কোটি ৫০ লাখ, ইউরোপে ১৫ কোটি ২০ লাখ, মেক্সিকোতে ১২ কোটি ৩০ লাখ, ইথিওপিয়ায় ১২ কোটি ১০ লাখ ও মিসরে ১০ কোটি ৩০ লাখ মানুষকে দুঃসহ গরমের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’ বলেছে, জুনের ভয়াবহ গরমে পড়েছিল বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ। গত ১৬ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত অস্বাভাবিক এই তাপমাত্রা আরও অন্তত ৩ বার পরিলক্ষিত হয়েছিল।
ক্লাইমেট সেন্ট্রাল নামের আরেকটি সংস্থার প্রধান পোগ্রাম অফিসার অ্যান্ড্রু পার্সিং বলেছেন, “গত ১০০ বছর ধরে কয়লা, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ানোর কারণে বিশ্ব এখন আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।”
অ্যান্ড্রু পার্সিং এ ব্যাপারে মহাবিপদের কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “চলতি বছরের গ্রীষ্মে যে তাপপ্রবাহ দেখা গেছে সেটা অপ্রাকৃতিক বিপর্যয়। আর যতদিন পর্যন্ত কার্বনের দুষণ বন্ধ না করা হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত এটি একটি স্বাভাবিক বিষয়ে রূপ নেবে।”