• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

টাইটানিকের মতোই হলো সাবমেরিন টাইটানের পরিণতি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২৩, ১০:৫৯ এএম
টাইটানিকের মতোই হলো সাবমেরিন টাইটানের পরিণতি

আটলান্টিক সাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া সাবমেরিন টাইটানেরও একই পরিণতি হলো। টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের পাশেই পাওয়া গিয়েছে টাইটান সাবমেরিনের ধ্বংসস্তূপ। চার দিন মহাসাগরের তলদেশে ব্যাপক তল্লাশির পর বৃহস্পতিবার উদ্ধারকারীরা টাইটানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা জানান।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কাছেই অপর একটি ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পান। গতকাল অভিযানে নতুন করে ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের দুটি জাহাজ অংশ নেয়। নামানো হয় ‘ভিক্টর-৬০০০’ নামের বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন রোবট। ওই রোবটই টাইটানের ধ্বংসাবশেষের ছবি তুলে পাঠায়।

সেখানে সাবমেরিন টাইটানের পাঁচটি বড় অংশ পাওয়া যায়। আর এসব অংশ দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে, পানির নিচে যাওয়ার পর এতে বিস্ফোরণ হয়েছিল। তখনই অনেকটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে টাইটান এবং ভেতরে থাকা পাঁচজনের পরিণতি। তারপরও অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কানাডা, ফ্রান্সসহ আরও কয়েক দেশের উদ্ধারকারী দল।

যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মুগের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বোস্টন শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন।

একইভাবে খবরটি নিশ্চিত করেছে ওই সাবমেরিন পরিচালনাকারী সংস্থা ওশানগেট। বৃহস্পতিবার প্রথম প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে পাঁচ আরোহীর মৃত্যুর কথা জানানো হয়। ধারণা করা হচ্ছে, পানির প্রচণ্ড চাপে সাবমেরিনটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সাবমেরিনের পাঁচ আরোহীর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়। টাইটানের ভেতরে যাত্রীরা হলেন পাকিস্তানি  ব্যবসায়ী ও ধনকুবের শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯), ওশানগেটের মালিক স্টকটন রাশও আছেন। আরেকজন পর্যটক ছিলেন ব্রিটেনের ধনকুবের হ্যামিশ হার্ডিং। যুদ্ধবিমান নির্মাণকারী সংস্থা ‍‍‘অ্যাকশন এভিয়েশনে’র চেয়ারম্যান তিনি। গভীর সমুদ্রে যাওয়ার নেশা ছিল তাঁর। এ ছাড়া ৭৭ বছর বয়সী ফরাসি পরিব্রাজক নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ডাইভার পল-হেনরি নারগোলেট।

এর আগে গত রোববার কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড প্রদেশের সেন্ট জন শহর থেকে টাইটান ডুবোজাহাজটি নিয়ে রওনা দেয় ‘পোলার প্রিন্স’ নামের একটি জাহাজ। আটলান্টিকের যেখানে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, সেখানে জাহাজটি পৌঁছানোর পর পাঁচ আরোহীকে নিয়ে সাগরের তলদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে সাবমেরিনটি। সাগরপৃষ্ঠ থেকে তলদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সাবমেরিনটির।

এরপর সাবমেরিনের সন্ধানে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়। উত্তর আটলান্টিকে যে অঞ্চলজুড়ে উদ্ধারকাজ চালানো হয়, তার আয়তন যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যের দ্বিগুণ। আরোহীরা বেঁচে আছেন বলে গতকালও আশা প্রকাশ করেছিলেন পরিবারের সদস্য ও উদ্ধারকারীরা। গত মঙ্গল ও বুধবার কানাডার উদ্ধারকারী দল আটলান্টিকের তলদেশ থেকে কিছু শব্দ শনাক্তের পর ওই আশা আরও জোরদার হয়।

টাইটানিক জাহাজটি ১৯১২ সালে সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক আসার পথে একটি বরফ খণ্ডের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। এটি ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে বড় জাহাজ এবং প্রথম যাত্রাও তা শেষ করতে পারেনি। ওই দুর্ঘটনায় জাহাজে থাকা ২ হাজার ২০০ যাত্রী এবং ক্রুদের মধ্যে ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। ১৯৮৫ সালে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে এ নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু হয়।

Link copied!