ঝড়ের তাণ্ডবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রায় ২০ লাখ অধিবাসী বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। প্রবল ঝড়ের আঘাতে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে বেশ কয়েকটি এলাকায়। নিহত হয়েছেন অন্তত চারজন।
সোমবার এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শক্তিশালী বাতাস ও বন্যার কারণে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ২০ লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন বলে জানিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার নিজস্ব অঞ্চল ছাড়াও অধিকৃত ইউক্রেনের কয়েকটি এলাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে।
রাশিয়ার জ্বালানি মন্ত্রণালয় বলছে, দাগেস্তান, ক্রাসনোদার ও রোস্তভের পাশাপাশি ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন, জাপোরিঝিয়া ও ক্রিমিয়া বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেন বলেছে, তুষার ঝড়ের পরে সেখানে দুই হাজার গ্রাম ও শহরে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঝড়টি রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাশাপাশি মলদোভা, জর্জিয়া ও বুলগেরিয়াতেও আঘাত হেনেছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি আরও জানিয়েছে, রাশিয়ার কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর সোচিতে বড় বড় ঢেউ সমুদ্র উপকূলে আঘাত হানতে দেখা গেছে। উপকূলের একটি তিনতলা ভবন ধসে পড়তে দেখা গেছে এক ভিডিওতে।
এ ছাড়া উপকূলের আনাপা শহরের কাছে ২১ জন ক্রুসহ একটি পণবাহী জাহাজ ডুবে গেছে। রাজধানী মস্কোতে ভারী তুষারপাতের পর কর্তৃপক্ষকে রাস্তা পরিষ্কার করতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্রিমিয়া উপদ্বীপে মস্কো নিযুক্ত কর্মকর্তারা সেখানে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে। শহরের রাস্তায় গাছ ও অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তুষারঝড় ও প্রচণ্ড বাতাস দেশটির ১৬টি অঞ্চলে আঘাত হেনেছে। দক্ষিণ-পশ্চিমের ওডেসা অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটি। আটকে পড়া যানবাহন থেকে অন্তত ৪০ জনকে সরিয়ে নিয়েছেন উদ্ধারকারীরা।
কিছু কিছু স্থানে তুষারপাত দুই মিটারের বেশি হওয়ার কারণে ৮৪০টির মতো যানবাহনকে সরিয়ে নিতে হয়েছে।
এ ছাড়া ১ হাজার ৩৭০টি পণ্যবাহী লরি সড়কে আটকে রয়েছে। সেখানে ৬ ব্যক্তি হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। ১৪টি মোটরওয়েতে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ইউক্রেনের দক্ষিণ মাইকোলাইভ অঞ্চলটিতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বিবিসির ওই প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, ইউক্রেনজুড়ে অন্তত দেড় হাজারের বেশি উদ্ধারকারী মোতায়েন করা হয়েছে। এতে পুলিশ, সীমান্তরক্ষী ও ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা রয়েছেন।