পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর করাচীতে একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে পদদলিত হয়ে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের সবাই নারী ও শিশু। দেশটির পুলিশ ও উদ্ধার কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, করাচীর সিন্ধু ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ট্রেডিং এস্টেট (এসআইটিই) এফকে ডাইং কোম্পানির কর্মীদের মধ্যে যাকাত বিতরণ চলছিল। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৫ জন।
উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের পাশে থাকা একটি নালাতে পড়ে যান নারী ও শিশুসহ অসংখ্য মানুষ। তখন একে-অপরের উপর চাপা পড়েন অনেকে।
স্থানীয় পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। যাকাত ও পণ্য নিতে সেখানে অসংখ্য মানুষ জড়ো হয়েছিল। ওই সময় ফ্যাক্টরির নালায় পড়ে যান অনেকে। নিহতদের বেশিরভাগের মৃত্যু হয়েছে নালায় পড়েই। এ ঘটনায় সাতজনকে আটক করা হয়েছে।
করাচীর কিয়ামারি জেলার ঊর্ধ্বতন পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট ফিদা হুসেইন বলেন, “যাকাত নিতে আসেন শত শত নারী। আর বিশাল ভিড় জমে যাওয়ার ভয়ে কোম্পানির স্টাফরা কারখানার ফটক বন্ধ করে দেয়। ভেতরে যারা যাকাত নিতে জড়ো হয়েছিলেন সেখানে লাইন ধরে দাঁড়ানোর কোনো ব্যবস্থা ছিল না। স্থানীয় পুলিশকেও যাকাত বিতরণের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। ভিড়ের মধ্যে গরমে এবং হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে কয়েকজন নারী অচেতন হয়ে পড়েন।”
সংবাদমাধ্যম জিও টিভি জানিয়েছে, যে ফ্যাক্টটিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে প্রতি বছর রমজান মাস উপলক্ষে বিনামূল্যের পণ্য ও যাকাত বিতরণ করা হয়। এর অংশ হিসেবে এবারও অসহায়দের ডাকা হয়েছিল।
এদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আর উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে পাকিস্তানের জনগণের বেহাল অবস্থা। ক্রমেই বেড়ে চলছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। মুদ্রাস্ফীতির হার বেড়ে ৪৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জ্বালানি তেলের দামও আকাশছোঁয়া। কোথাও কোথাও অর্থ দিয়েও মিলছে না ডাল, আটা, তেলের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। এমতাবস্থায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দেশটির জনগণ।
পবিত্র রমজান মাসে কিছু প্রদেশে বিনা মূল্যে আটা বিতরণের কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। সেই আটা সংগ্রহ করতে মারাত্মক ভিড়ে হুড়োহুড়ি লেগে যায়। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে কিংবা অপেক্ষা করেও আটা পাচ্ছেন না মানুষ। এ অবস্থায় দেশটির পেশোয়ার ও ডেরা ইসমাইল খান এলাকায় বিনা মূল্যে আটা ও ময়দা সংগ্রহের জন্য অপেক্ষায় থাকা মানুষরা ট্রাকে লুটপাট চালিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ৬ জন নিহত হয়েছেন।