পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো তাদের পারমাণবিক প্রকল্পে প্রতি মিনিটে অন্তত ১ লাখ ৭৩ হাজার ৮৮৪ ডলার ব্যয় করছে। প্রতি সেকেন্ডের হিসাবে ব্যয় করছে ২ হাজার ৮৯৮ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার ৩২ টাকা।
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নভিত্তিক নোবেলজয়ী সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার ওয়েপনস (আইক্যান) প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে দেশগুলো যে পরিমাণ ব্যয় করেছে তা আগের বছর তথা ২০২২ সালের তুলনায় ১ হাজার ৭০ কোটি ডলার বেশি। ২০২৩ সালে সারা বিশ্বে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো ৯১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বা ৯ হাজার ১৪০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। গত বছরও আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে এই খাতে।
খবর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
আইক্যানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মোট ৫ হাজার ১৫০ কোটি ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চীন ব্যয় করেছে ১ হাজার ১৯০ কোটি ডলার। তৃতীয় অবস্থানে থাকা রাশিয়া ব্যয় করেছে ৮৩০ কোটি ডলার।
এ ছাড়া, যুক্তরাজ্য ব্যয় করেছে ৮১০ কোটি ডলার এবং ফ্রান্স ৬১০ কোটি ডলার। অপর তিন পারমাণবিক অস্ত্রধর দেশ পাকিস্তান, ভারত ও ইসরায়েলও এই খাতে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে। তবে দেশগুলো স্বঘোষিত পারমাণবিক শক্তিধর নয় এবং তারা এই খাতের ব্যাপারে স্পষ্ট কোনো তথ্যই দেয় না।
পাঁচ বছর আগে থেকে আইক্যান এই পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে ব্যয়ের বিষয়টি নিয়ে গবেষণা শুরু করে। সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত এই খাতে ব্যয় মোট ৩৪ শতাংশ বা ২ হাজার ৩২০ কোটি ডলার বেড়েছে। এর মধ্যে এককভাবে যুক্তরাষ্ট্রেরই পারমাণবিক ব্যয় বেড়েছে ৪৫ শতাংশ, যুক্তরাজ্য বাড়িয়েছে ৪৩ শতাংশ। আইক্যান বলছে, বর্তমান প্রবণতা বজায় থাকলে চলতি বছরের মধ্যে এই খাতে ব্যয় ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুসারে, বর্তমানে সারা বিশ্বে ৯ হাজার ৫৮৫টি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। মূলত চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ৪১০ থেকে ৫০০ তে গিয়ে ঠেকায় এই বৃদ্ধি ঘটেছে।
বিশ্বে যে পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র আছে তার মধ্যে ৯০ শতাংশই রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। রাশিয়ার কাছে আছে ৪ হাজার ৩৮০টি অস্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আছে ৩ হাজার ৭০৮টি অস্ত্র। অনুমান করা হয়, ব্রিটেনের কাছে আছে ২২৫টি পারমাণবিক অস্ত্র ও ফ্রান্সের কাছে ২৯০টি অস্ত্র।