প্রথমবারের মতো গাজায় ইসরায়েলের হামলা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযানে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারের সময় ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। তবে তারা কোনো সিদ্ধান্তমূলক উপসংহারে পৌঁছায়নি।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কংগ্রেসের কাছে ৪৬ পৃষ্ঠার পর্যালোচনায় এই সম্ভাব্য অভিযোগের কথা বলা হয়েছে।
বাইডেন প্রশাসন বলছে, গাজায় যুদ্ধের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কারণে নির্দিষ্ট ঘটনাগুলো যাচাই করা সম্ভব হয়নি; যেসব ঘটনায় মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই একের পর এক দেশ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে। এমনকি দেশটির বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত আইসিসিতে গণহত্যা মামলাও হয়েছে। এত কিছুর পরও ইসরায়েলকে অন্ধের মতো সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত কয়েক মাসে রাফায় ইসরায়েলি স্থল হামলা ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপড়েন চলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুমকি উপেক্ষা রাফার চারপাশ ঘিরে অভিযান শুরু করে নেতানিয়াহু প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে এবারই প্রথম ইসরায়েলের এত কঠোর সমালোচনা করল তেল আবিবের প্রধার মিত্র ওয়াশিংটন।
রয়টার্স বলছে, রাফায় হামলা ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যকার সম্পর্কে যে ফাটল ধরেছে তা মার্কিন এই প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে আরও প্রকট হয়েছে। ইতিমধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীকে রাফা অভিযান থেকে বিরত রাখতে অস্ত্রের একটি চালান বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া নিষেধ সত্ত্বেও রাফায় অভিযানে গেলে সামনের দিনে তেল আবিবকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে বাইডেন প্রশাসন।
রাফা হলো মিসর সীমান্তে অবস্থিত গাজার সর্বদক্ষিণের শহর। ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে এই শহরে গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয়গ্রহণ করেছেন। এত মানুষ আশ্রয়গ্রহণ করলেও বারবার রাফায় স্থল অভিযানের হুমকি দিয়ে আসছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ইসরায়েলের দাবি, এই শহরে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের ছয়টি যুদ্ধ ব্যাটালিয়নের মধ্যে চারটির ঘাঁটি রয়েছে। পরবর্তীতে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে আরও হামাস যোদ্ধা তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। ফলে তারা আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। হামাসের এসব ঘাঁটি নির্মূল না করা পর্যন্ত ইসরায়েলের চূড়ান্ত বিজয় নিশ্চিত হবে না বলেও মনে করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। তবে ব্যাপক প্রাণহানির শঙ্কায় ইসরায়েলি এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন এই বিরোধিতায় পশ্চিমা আরও বিভিন্ন দেশ যোগ দিয়েছে।