দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরলেন তারা। তবে সবকিছুই বিধ্বস্ত। চারপাশের ধ্বংসস্তূপে খুঁজছেন স্বজনদের। গাজায় ১৫ মাসের বেশি সময় পর হামাস-ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে। নিজ নিজ এলাকায় ফিরে বাসিন্দারা ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনে খুঁজছেন স্বজনদের মরদেহ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দেহাবশেষ খুঁজতে কাজ করছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, যুদ্ধবিরতি শুরুর আগে হারানো স্বজনদের খুঁজতে অসংখ্য পরিবারের শতাধিক ফোন পেয়েছেন বলে জানান স্বেচ্ছাসেবকরা। এক স্বেচ্ছাসেবী জানিয়েছেন, দুই দিনে গাজায় ১২০টি পচাগলা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অনেক মরদেহের কঙ্কাল ছাড়া আর কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই বলে জানান ওই স্বেচ্ছাসেবী।
নিজ নিজ বাড়িতে বসবাস করতে এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। তবে ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
গত ১৫ মাসের ইসরায়েলি হামলায় গাজার প্রায় ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, ৯০ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। সেই সঙ্গে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে হাজার হাজার অবিস্ফোরিত বোমা। ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা হাজার হাজার অবিস্ফোরিত বোমা সরাতে প্রায় এক দশক সময় লাগতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজা থেকে ৪ কোটি ২০ লাখ টনের বেশি ধ্বংসাবশেষ সরাতে হবে। এতে সময় লেগে যেতে পারে ১০ বছর। এই পরিমাণ ধ্বংসাবশেষ সরাতে অর্থ লাগবে প্রায় ৭০ কোটি ডলার।
এনভায়রনমেন্টাল কোয়ালিটি অথরিটি অব প্যালেস্টাইনের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় অন্তত ৮৫ হাজার টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর মধ্যে অনেক বোমা ধ্বংসস্তূপের নিচে অবিস্ফোরিত অবস্থায় আছে। এসব বোমা নিষ্ক্রিয় কিংবা অপসারণ করা বেশ জটিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে প্রক্রিয়াটি বেশ ব্যয়বহুল। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তহবিল সহযোগিতা অপরিহার্য বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।