ভূমিকম্প বিধ্বস্ত জাপানে এখন সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন উদ্ধারকর্মীরা। ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়াদের জীবীত উদ্ধার করতে এই মরিয়া চেষ্টা। ঘটনার পর এ পর্যন্ত ৩০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
গত সোমবার (১ জানুয়ারি) জাপানে মোট ১৫৫ বার ভূমিকম্প হয়। এই তথ্য জানিয়েছে, দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর। এসব ভূমিকম্পের মধ্যে সবচেয়ে বড়টির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৬। ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে দেশটির ভবন ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়। যোগাযোগ বিচ্ছন্ন হয়ে পড়ে জনপদের পর জনপদ। অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় হাজার হাজার বাড়ি-ঘর।
জাপানের আবহাওয়া অধিদপ্তর ও মার্কিন ভূতত্ব জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এর তথ্য অনুযায়ী ঘটনার দিনজুড়ে কয়েক মিনিট পর পর মৃদু মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যে ৩০টি ভূমিকম্প হয়েছে সেগুলো ছিল মাঝারি মাত্রার। এই পর্বের ভূমিকম্পগুলোর সবচেয়ে ছোটটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩ এবং সবচেয়ে বড়টির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৬।
জানা যায়, দেশটির মূল ভূখণ্ড হোনশু দ্বীপের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রশাসনিক এলাকা নোটো রিজিয়নের ইশিকাওয়া জেলা ছিল এসব ভূমিকম্পের এপিসেন্টার। ভূমিকম্পের কারণে পশ্চিমাঞ্চলীয় বিভিন্ন এলাকায় সুনামিও হয়েছে। অধিবাসীরা জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঁচতে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটতে বাধ্য হয়েছেন।
দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পশ্চিম উপকূলে সুনামির জলোচ্ছ্বাস ছিল সবচেয়ে বেশি। সেখানে বেশকিছু বাড়ি-ঘর ও গাড়ি সাগরে ভেসে গেছে। ভূমিকম্পের মূলকেন্দ্র এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায় বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে।
ভূমিকম্পের পর উদ্ধার কাজে অংশ নেয় হাজার হাজার সেনা সদস্য ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।
উদ্ধারকারীরা জানিয়েছে- রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতির কারণে উদ্ধার কাজে কাঙ্ক্ষিত গতি আনা সম্ভব হচ্ছে না। এর মধ্যেও সর্বোচ্চ গতিতে কাজ করছে উদ্ধারকর্মীরা।
জাপানের টেলিভিশন চ্যানেল এনএইচকে জানিয়েছে— রাজধানী টোকিও এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে নোটো প্রশাসনিক অঞ্চলের রেল, নৌ, সড়ক এবং বিমান যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সোমবার ৫ শতাধিক মানুষ ইশিকাওয়ার বিমানবন্দরে গাড়িতে রাত কাটাতে বাধ্য হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সকালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন। সেই বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এখনো বিভিন্ন ভবনের নিচে আটকা রয়েছেন অনেক মানুষ। সড়ক যোগাযোগ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উদ্ধার কাজ গতি পাচ্ছে না। বেগ পেতে হচ্ছে। তবে উদ্ধারকারীরা সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাদের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
সূত্র-রয়টার্স