কলকাতায় আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রকাশ করছে বিজেপির। ১২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচিতে সকাল থেকেই রাজ্যে কার্যত রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সঙ্গে সংঘাত ও গুলির ঘটনাও ঘটেছে।
বুধবার (২৯ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় রেল অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা। যার ফলে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। লক্ষ্মীকান্তপুর সেকশনে অনেক জায়গায় রেলের ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলে দেয়া হয়। ফলে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। শিয়ালদহ থেকে নামখানা, লক্ষ্মীকান্তপুর, কাকদ্বীপে ট্রেন চলাচল অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল।
এর আগে, মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানকে ঘিরে পুলিশের বাড়াবাড়ির প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টার পশ্চিমবঙ্গ `বনধ` (অবরোধ) কর্মসূচি ঘোষণা করে বিজেপি।
হুগলি স্টেশনে বিজেপি সমর্থকরা রেললাইনে শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এর ফলে বেশ কিছুক্ষণ রেল চলাচল বন্ধ থাকে। সকাল ছয়টা থেকে বনগাঁয় বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়ার নেতৃত্বে রেল অবরোধ শুরু হয়। মুর্শিদাবাদের বেশ কয়েকটি স্টেশনেও রেললাইন অবরোধ করেছে বিজেপি। কৃষ্ণনগরেও বিজেপি কর্মীরা রেল অবরোধ করে। সোনারপুরে রেল অবরোধকে কেন্দ্র করে বিজেপি কর্মী ও পুলিশের মধ্যে হাতাহাতি হয়। কর্মীরা লাইনে শুয়ে পড়ে। পুলিশ তাদের জোর করে তুলতে চায়।
এছাড়া বেশ কয়েকটি জেলায় সড়ক অবরোধ করা হয়। বালুরঘাটে বাসস্ট্যান্ডের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। কলকাতায় টালা ব্রিজ অবরোধ করে বিজেপি কর্মীরা টায়ার জ্বালায়। এসপ্ল্যানেড ও শ্যামবাজারে তারা জোর করে মেট্রো স্টেশন বন্ধ করার চেষ্টা চালায়। এ সময় পুলিশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
এর মধ্যে সকাল নয়টার কিছু পরে ভাটপাড়ায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। রবি সিং নামে এক ব্যক্তির কানের পাশে গুলির আঘাত লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সাবেক বিধায়ক অর্জুন সিং দাবি করেছেন, ঘোষপাড়া রোডে পুলিশের উপস্থিতিতেই গুলি চলেছে। দুই জনের গায়ে গুলি লেগেছে। একজনের মাথা ঘেঁষে গুলি চলে গেছে। বিজেপি কর্মী রবি সিংয়ের কানে গুলি লেগেছে। বিজেপি এসব হামলার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসকে দায়ী করেছে।
অর্জুনের দাবি, মোট সাত রাউন্ড গুলি চলেছে।
দুর্গাপুরের বেনাচিতিতে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্যদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। বিজেপি বিধায়ক সেখানে পথে নেমে বিক্ষভে অংশ নেন।
এ সময় তৃণমূল কংগ্রেস অবরোধ বিরোধী মিছিল শুরু করে। দুই দলের মিছিল মুখোমুখি হলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়য়। এতে বিধায়কসহ একাধিক বিজেপি কর্মী আহত হন।
মালদহে বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সেখানেও দুই দলের কর্মীরা মিছিল বের করেছিল। তারপর তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। জামুড়িয়াতেও দুই দলের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।