ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আর এ কারণেই শুক্রবার (২৪ মার্চ) লোকসভা থেকে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। আনন্দবাজার ও এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, রাহুল গান্ধীর লোকসভার পদ বাতিল করেছেন স্পিকার ওম বিড়লা। শুক্রবার লোকসভার সচিবালয় থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।
এক বিবৃতিতে লোকসভা জানিয়েছে, “রাহুল গান্ধী, লোকসভার কেরালার ওয়ানাড আসন থেকে, দণ্ড পাওয়ার দিন ২৩ মার্চ ২০২৩ সাল থেকে, ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)- অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নাম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ বাতিল করা হল।”
জনপ্রতিনিধি আইনের ৮(৩) উপধারায় বলা আছে, যখন লোকসভার কোনো সদস্য কোনো অপরাধে দুই বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য দণ্ড পান তাৎক্ষণিকভাবে তার সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়।
২০১৩ সুপ্রিম কোর্ট এক মামলার রায়ে জানিয়েছিলেন, কোনো মামলায় কোনো সংসদ সদস্য, বিধায়ক অথবা বিধান পরিষদের (বিধানসভার উচ্চকক্ষ) সদস্যের দুই বছর বা তার বেশি সময়ের সাজা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সদস্য পদ সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হয়ে যাবে।
এর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
মোদিকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘চৌকিদার চোর’। তিনি বলেছিলেন, ‘সব মোদিরা কেন চোর হয়’। ওই মন্তব্যের জেরে বিজেপি বিধায়ক ও গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী পুরনেশ মোদি কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার ক্ষমতাসীন বিজেপি দাবি করেছিল, নিম্ন আদালত যেহেতু রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করেছে, সেহেতু লোকসভায় তার সদস্য পদ সঙ্গে সঙ্গে খারিজ হয়ে যাবে।
এদিকে শুক্রবার নরেন্দ্র মোদী সরকারে বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপপ্রয়োগের অভিযোগ তুলে অন্য বিরোধী দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে কংগ্রেস। দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ১২টি বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বাম, ডিএমকের পাশাপাশি বৈঠকে ছিল অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টিও (আপ)। এর পরে সংসদ ভবন থেকে মিছিল করে রাষ্ট্রপতি ভবনে যান তারা।
ওই রায় উচ্চ আদালতে স্থগিত বা বাতিল না হলে আগামী নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবেন না তিনি।