কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বিজেপির আদর্শিক ‘রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘকে (আরএসএস)’ মিসরভিত্তিক ইসলামি সংগঠন ‘মুসলিম ব্রাদারহুডের’ সঙ্গে তুলনা করে একটি ‘মৌলবাদী’ এবং ‘ফ্যাসিবাদী’ সংগঠন বলে মন্তব্য করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
সোমবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় লন্ডনে ‘চ্যাথাম হাউস’ থিঙ্ক-ট্যাংকের মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
যুক্তরাজ্যে গিয়ে রাহুল প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও কোনো না কোনো অনুষ্ঠানে ভারতের ‘গণতন্ত্রহীনতা ও স্বৈরতান্ত্রিক আবহের’ তীব্র সমালোচনা করছেন।
রাহুল গান্ধী বলেন, “ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বর্তমানে হুমকির মধ্যে রয়েছে। বিজেপি চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে এবং কংগ্রেস চিরতরে বিদায় নিয়েছে এমন ধারণা হাস্যকর। ভারতে গণতান্ত্রিক প্রতিযোগিতার প্রকৃতি সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়েছে। এটি পরিবর্তিত হওয়ার কারণ হলো আরএসএস নামে একটি সংগঠন। একটি মৌলবাদী, ফ্যাসিবাদী সংগঠন, যা ভারতের প্রায় সব প্রতিষ্ঠান দখল করেছে। এরা গণতন্ত্রের কথা বলে প্রথমে ক্ষমতা দখল করে। এরপর সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান দখলে নিয়ে গণতন্ত্রকে উৎখাত করে।”
তিনি আরও বলেন, “আরএসএসকে একটি গোপন সমাজ বলা যেতে পারে। যা মুসলিম ব্রাদারহুডের আদলে গড়ে উঠেছে। আজ আমাদের দেশের বড় মিডিয়া, বিচার বিভাগ, সংসদ, নির্বাচন কমিশন সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে। বিরোধী কণ্ঠস্বর জোর করে চাপা দেওয়া হচ্ছে। ভারতের চিরায়ত খোলামেলা পরিবেশটা উবে গেছে।”
এ ছাড়া রাহুল কংগ্রেস ও তার নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটের সমালোচনা করে বলেছেন, স্বাধীনতার পর থেকে বেশির ভাগ সময় কংগ্রেসই ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু তারা ভারতীয় রাজনীতির পরিবর্তনশীল প্রকৃতির দিকে সেভাবে মনোযোগী হতে পারেনি। ইউপিএ জোট সে কারণেই ধরাশায়ী হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেছেন, নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে রাহুল এখন দেশে–বিদেশে যেখানে পারছেন দেশের বদনাম করছেন। এটা তিনি করছেন পরিকল্পিতভাবে। কিন্তু বিজেপি নেতাদের সমালোচনা সত্ত্বেও রাহুল একই রকম সক্রিয়। এ অবস্থায় রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়েছে, দেশে ফিরে সংসদে তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় কি না।
প্রসঙ্গত, রাহুল গান্ধী আরএসএসকে মিসরভিত্তিক ইসলামি সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে এই প্রথম তুলনা করলেন না। এর আগে ২০১৮ সালেও লন্ডনে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ’–এ এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেছিলেন।