মধ্য আফ্রিকার দেশ কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনবিরোধী বিক্ষোভে ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৫৬ জন। অধিকারকর্মীরা অভিযোগ করেন, দেশটির সেনাবাহিনী এই বিক্ষোভ কঠোরভাবে দমন করা শুরু করলে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (৩০ আগস্ট) দেশটির উত্তর কিভু প্রদেশের পূর্বাঞ্চলীয় শহর গোমায় ন্যাচারাল জুডাইক অ্যান্ড মেসিয়ানিক ফেইথ টুওয়ার্ডস দ্য নেশনস নামক একটি ধর্মীয় উপদলের সদস্যরা জড়ো হন। তারা মনুস্কো নামে পরিচিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী এবং পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোর বাহিনীর তাদের দেশে উপস্থিতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। একপর্যায়ে তাদের ওপর সেনাবাহিনী হামলা চালালে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।
কঙ্গোর সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, “সরকারি আদেশ অমান্য করে কর্মসূচি চালানো এবং পাথর ছুড়ে এক পুলিশ সদস্যকে হত্যা করার ফলে পুলিশের হস্তক্ষেপে শান্তি পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। সামরিক বাহিনী ও হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী ৪৩ জন নিহত এবং ৫৬ জন আহত হয়েছেন।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ধর্মীয় উপদলটির নেতা এফরাইম বিসিমওয়াসহ ১৫৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
কঙ্গো সরকার জানিয়েছে, এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে এবং অপরাধীদের দ্রুতই বিচারের আওতায় আনা হবে। এ ছাড়া কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার পর দেশটিতে প্রতিবাদ সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিক্ষোভের সময় একজন পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর কঙ্গোর সেনারা অভিযান শুরু করে। তবে বার্তা সংস্থাটি সেই ফুটেজ যাচাই করতে পারেনি। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, সেনারা একটি লরিতে মৃতদেহ স্তূপাকারে রাখছেন এবং গাড়িতে করে সেগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই ভিডিওটিও যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
এদিকে এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে কঙ্গোর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কো। এক বিবৃতিতে তারা সহিংসতার ঘটনায় উদ্বিগ্ন বলেও জানিয়েছে।
কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালের জুলাই মাসে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনবিরোধী বিক্ষোভের ফলে গোমা ও বুটেম্বো শহরে ১৫ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।