আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দিয়েছেন মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়েখ মাহের আল মুয়াইকিলি। খুতবায় তিনি বলেন, “হে মানুষ, আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য করো, কোরআনে বলা হয়েছে যে অন্যায় করবে আল্লাহ তাকে শাস্তি দেবেন।”
শায়েখ মাহের আল মুয়াইকিলি বলেন, “ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য এবং বিধান শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। আর যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে সে এমন জায়গা থেকে রিজিক পাবে যেখান থেকে সে কল্পনাও করতে পারবে না। আল্লাহ তায়ালা সবকিছুর মালিক। তিনি আমাদের জন্য রহমত হিসেবে কোরআন অবতীর্ণ করেছেন। কোরআন এমন একটি গ্রন্থ যার প্রতিটি আয়াত প্রজ্ঞায় পরিপূর্ণ। এই কোরআন মানুষকে সরল পথ দেখায়।”
খুতবায় শায়েখ মাহের আল মুয়াইকিলি বলেন, “তাকওয়া মানুষকে সফলতা ও মুক্তি দেয়, তাকওয়া অবলম্বনকারীরা কিয়ামতের দিন দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্ত থাকবে। সে তাকওয়া অবলম্বন করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দেবেন যেখান থেকে সে কল্পনাও করতে পারবে না। যে তাকওয়া অবলম্বন করবে আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে তাকে প্রতিদান দেবেন। আল্লাহ তায়ালা হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছেন। যারা নবীজিকে সম্মান করবে, ঈমান আনবে এবং আল্লাহ হেদায়েত স্বরূপ যে কোরআন নাজিল করেছেন তার বিধান মেনে চলবে তারাই সফল।”
হজের খুতবায় ফিলিস্তিনের মুসলমানদের জন্য রহমত কামনা করে দোয়া করেন শায়েখ মাহের আল মুয়াইকিলি। খুতবায় ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে তুলে ধরে তিনি বলেন, “ফিলিস্তিনের মুসলমানেরা যুদ্ধের কবলে। তারা বিপর্যস্ত। তাদের খাওয়ার পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, খাবার নেই, পৃথিবীর সব ধরনের আরাম ও সুখ থেকে তারা বঞ্চিত। তাদের জন্য দোয়া করুন। বিশ্ব মুসলিমের কাছে এটা তাদের পাওনা।”
শায়েখ মাহের আল মুয়াইকিলি আরও বলেন, “যারা ফিলিস্তিনিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন, সহযোগিতার চেষ্টা, অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সহযোগিতা করছেন, করছেন তারাও দোয়ার হকদার। এছাড়াও যারা হজযাত্রীদের সেবা করছেন তারাও দোয়ার হকদার।”
এদিকে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হয়ে আল্লাহ তাআলার দরবারে উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন হাজিরা। শনিবার (১৫ জুন) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করবেন তারা। হাজিরা এক আজানে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের পর মুজদালিফায় গিয়ে একসঙ্গে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন তারা। রোববার (১৬ জুন) আবার মিনায় ফিরে পশু কোরবানি করবেন।
আরাফাতের ময়দান হারাম এলাকার সীমানার বাইরে অবস্থিত। মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আরাফাতের ময়দান। এ ময়দানের প্রান্তে দাঁড়িয়েই রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “হজের সব হলো আরাফাতে।” (মুসনাদে আহমদ ৪/৩৩৫)