ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক একটি ঘটনায় আটকে থাকার কারণ নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। তিনি বলেছেন, “আমাদের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক, গঠনমূলক সম্পর্ক নির্মাণ করতে চায় ভারত।”
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্রসচিব এম রিয়াজ হামিদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। এর আগে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় তাকে জরুরি তলব করা হয়।
জরুরি তলব পেয়ে বিকেল পৌনে চারটার দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন প্রণয় ভার্মা। পররাষ্ট্রসচিব এম রিয়াজ হামিদুল্লাহর সঙ্গে আধাঘণ্টার বৈঠক করেন। এরপর বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
এ সময় প্রণয় ভার্মা বলেন, “আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক। বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখব। আমরা দুই দেশের মানুষের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে আগ্রহী।”
এর আগে ২ ডিসেম্বর সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা হামলা আর ভাঙচুর চালায়। পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। এছাড়া মিশনের কর্মকর্তাদেরও মারধর করে।
এ ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত, ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ করা, কূটনীতিক ও অ-কূটনৈতিক সদস্যদের নিরাপত্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
পরে এ ঘটনায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ভাঙচুরের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। কোনো অবস্থাতেই কূটনৈতিক এবং কনস্যুলার সম্পত্তি লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।
এদিকে, সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর বরাতে ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য উইক জানিয়েছে, আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলা, ভাঙচুর ও জাতীয় পতাকায় আগুন দেওয়ার ঘটনায় তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও একজনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সাতজনকে।