যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ভারতে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি কোনো বৈষম্য করা হয় না। আর মোদির সঙ্গে মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাইডেন।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ভিন্নমতাবলম্বী এবং সাংবাদিকদের নির্যাতনের বিষয়ে বিস্তারিত অভিযোগ সামনে এনেছে বহু মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। এরপরও সংবাদ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এমন দাবি করেছেন।
‘মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের অধিকার ও বাক স্বাধীনতা রক্ষায় আপনি কেমন পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক?’ সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাবে মোদি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, ‘আমার সরকার ও আমাদের সংবিধান প্রমাণ করেছে যে গণতন্ত্র নিশ্চিত করা সম্ভব। আমার প্রশাসনে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে কোনো ক্ষেত্রেই কোনো বৈষম্যের স্থান নেই।’
জো বাইডেনের আমন্ত্রণে নরেন্দ্র মোদি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সফরে রয়েছেন। ২০১৪ সালে প্রথমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি বেশ কয়েকবারই দেশটিতে সফরে গেছেন এবং তবে প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণের কারণে মোদির এই সফরটি যুক্তরাষ্ট্রে তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর বলে বিবেচিত হচ্ছে।
তবে মানবাধিকার গোষ্ঠী ও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে মোদি প্রশাসনের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের তথ্য রয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। ভারতে মুসলমান, হিন্দু দলিত, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ, মানবাধিকার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিষয়টি নিয়ে জনসম্মুখে মোদিকে প্রশ্ন করতে চাপ দিচ্ছিল বাইডেনের ডেমোক্র্যাটিক দলের কিছু নেতা ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। মোদির এমন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভ করতে বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের সামনে জড়ো হন অনেক মানুষ।
বিক্ষোভে উপস্থিত ইন্ডিয়ান আমেরিকান মুসলিম কাউন্সিলের অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর অজিত সাহি বলেন, “মোদির বোঝা উচিত সংবাদ সম্মেলনে কেন তাকে প্রথম এই প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। ভারতে অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি সবার কাছে স্পষ্ট।”
এদিকে গুরুত্বপূর্ণ এই সফরের শুরুতেই মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন মোদি। এমনকি মোদির মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠিও লিখেছেন ৭৫ জন মার্কিন আইনপ্রণেতা।
ওই চিঠিতে ওয়াশিংটন সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে ভারতে মানবাধিকারের বিষয়গুলো উত্থাপন করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে অনুরোধ করেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের ওই ৭৫ জন সদস্য। মার্কিন কংগ্রেসের সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের এই আইনপ্রণেতারা সবাই ডেমোক্র্যাট দলীয়।