পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সঙ্কট গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। ক্রমেই বেড়ে চলছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। মুদ্রাস্ফীতির হার বেড়ে ৪৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। দেশটির ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস (পিবিএস) সংবেদনশীল দামের সূচকের (এসপিআই) নিরিখে এ পরিসংখ্যান হাতে পেয়েছে।
সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। পিবিএস তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, পেট্রোলিয়াম দ্রব্যের বিপুল দামবৃদ্ধি হওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে আটা আর ডিমের দাম তিন গুণ বেড়ে যাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের কপালে। এছাড়া পেঁয়াজ, মুরগি ও ভোজ্যতেলের দামও নাগালের বাইরে চলে গেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে গত কয়েক দিন পাকিস্তানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২২৮ দশমিক ২৮ শতাংশ। সিগারেটের দাম বেড়েছে ১৬৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ডিজেল এবং কলার দাম বেড়েছে যথাক্রমে ১০২ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং ৮৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। এছাড়া গমের আটা ১২০ দশমিক ৬৬ শতাংশ, চা পাতা ৯৪ দশমিক ৬০ শতাংশ, বাসমতী ভাঙা চাল ৮১ দশমিক ২২ শতাংশ, পেট্রোল ৮১ দশমিক ১৭ শতাংশ, ডিম ৭৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পিবিএসের ট্র্যাক করা ৫১টি পণ্যের মধ্যে ২৬টি পণ্যের দাম বেড়েছে, ১৩টি পণ্যের দাম কমেছে। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩টি পণ্যের।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আর্থিক সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ)-এর ১১০ কোটি ডলারের ঋণে দিকে চেয়ে রয়েছে পাকিস্তান। তবে ওই ঋণ পাওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছে আইএমএফ। তার মধ্যে একটি হল পেট্রোলিয়াম সামগ্রীর দামকে নির্দিষ্ট একটি অঙ্কে রাখতে হবে।
পাকিস্তান অবশ্য আইএমএফের সঙ্গে চুক্তিতে যাওয়ার আগে একটি পরিকল্পনা নিয়েছে। পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট একটি অঙ্কের বেশি আয় করলে ধনী ব্যক্তিদের পেট্রল-ডিজেল কিনতে অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হবে। শুল্ক বাবদ গৃহীত ওই টাকা ভর্তুকি হিসাবে জনকল্যাণমূলক নানা প্রকল্পে ব্যয় করা হবে।
গত কয়েক মাসে পাকিস্তানে কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি চলছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) দ্বারা পরিমাপ করা বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ বেড়েছে ২৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। যা ১৯৭৫ সালের পর সর্বোচ্চ। চলতি বছরের ১৭ মার্চে শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১০ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।