প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ায় বেলুনে বেঁধে আবর্জনা পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার ৯টি প্রদেশের মধ্যে ৮টিতেই পাঠানো হয়েছে এমন অন্তত ২৬০টি বেলুন। বেলুনগুলোতে ময়লা-আবর্জনার পাশাপাশি লিফলেটও বাঁধা ছিল। এ ছাড়া বেশ কিছু আবর্জনার ব্যাগে লেখা ছিল ‘মলমূত্র’।
বুধবার (২৯ মে) বিবিসি, সিএনএন, দ্য গার্ডিয়ান, আল-জাজিরাসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিবেদনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে বুধবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ময়লা-আবর্জনা নিয়ে উড়ে আসা বেলুনগুলোকে যেন কেউ না স্পর্শ করে, সেই বিষয়েও সতর্কতা জারি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী। পাশাপাশি সন্দেহজনক পদার্থ থাকার আশঙ্কায় ময়লা-আবর্জনাভর্তি ব্যাগগুলো থেকে দূরে থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
একই দিন দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীও এ রকম আবর্জনা বাঁধা বেলুনের বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে একটি ছবিতে দেখা যায় বেলুনগুলোর চারপাশে ছড়িয়ে আছে আবর্জনা। অন্য একটি ছবিতে দেখা যায় একটি ব্যাগ, যার ওপর লেখা ‘মলমূত্র’।
উত্তর কোরিয়া লিফলেট আর আবর্জনা-ভর্তি এমন অন্তত ২৬০টি গ্যাস বেলুন পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ।
প্রতিবেশী রাষ্ট্রে আবর্জনা ভরে বেলুন পাঠানোর কথা স্বীকার করেছে উত্তর কোরিয়াও। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিভিন্ন সময়ে দক্ষিণ কোরিয়া যেসব ‘প্রপাগান্ডা’ ছড়িয়েছে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে, টয়লেট পেপার এবং প্রাণীর মলসংবলিত এই বেলুনের ঝাঁক পাঠিয়ে তার সমুচিত জবাব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ‘মলমূত্র’ বেঁধে এইভাবে বেলুন পাঠানোকে ‘অমানবিক’ বলে উল্লেখ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া কর্তৃপক্ষ। সিউলের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ বলেছেন, “আমরা উত্তর কোরিয়াকে অবিলম্বে তার অমানবিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য কঠোরভাবে সতর্ক করছি। উত্তর কোরিয়া যা করছে তা স্পষ্টভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং আমাদের জনগণের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষকে আগেই একটি বার্তা দেওয়া হয়েছিল। রোববার ( ২৬ মে) উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ রাজনীতিবিদ কিম কাং ইল এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘উত্তর কোরিয়ায় ‘নোংরা জিনিস’ পাঠানোর প্রতিক্রিয়া হিসেবে উত্তর কোরিয়াও দক্ষিণে আবর্জনা ও ময়লা পাঠাবে।’
প্রসঙ্গত, উত্তর কোরিয়ার বিদ্রোহীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিয়মিতভাবে পিয়ংইয়ংয়ের সমালোচনা লেখা বার্তাসহ লিফলেট বহনকারী প্রায়ই এমন বেলুন পাঠান দক্ষিণ কোরিয়া সেনারা। পিয়ংইয়ং অনেক দিন ধরেই দক্ষিণ কোরিয়ার এই ধরনের প্রচারণায় ক্ষুব্ধ। বাইরে থেকে আসা এসব তথ্য কিম জং উনের শাসনের জন্য হুমকি বলে মনে করে উত্তর কোরিয়া।