চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস বিশ্বজুড়ে কেড়ে নিয়েছে কোটির বেশি মানুষের প্রাণ। প্রায় তিন বছর পর নিয়ন্ত্রণে এসেছিল ভাইরাসটি। ভয়াবহতার সেই রেশ এখনও কাটেনি। এর মধ্যেই চীনের জিনঝু শহরে এবার সন্ধান পাওয়া গেল অদ্ভুত এক ভাইরাসের। যা এক ধরনের এঁটেল পোকার কামড়ে মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে।
সম্প্রতি দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে জুনে ভাইরাসটি প্রথম দেখা যায় জিনঝু শহরের ৬১ বছর বয়সী এক রোগীর শরীরে। যিনি জিনঝুর মঙ্গোলিয়ার জলা এলাকায় ‘টিক’ বা ‘এঁটেল’ পোকার কামড় খাওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমে জ্বর আসে। এরপর মাথা ব্যথা ও বমি হয়। অ্যান্টিবায়োটিকে কোনো কাজ হচ্ছিল না।
‘অদ্ভুত’ এই ভাইরাসের দেখা পাওয়ার পর গবেষকরা উত্তর চীনে এ নিয়ে বিশদ তদন্ত করেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৪ হাজার ৬০০ এঁটেল পোকা সংগ্রহ করেন তারা। যাদের মাঝে প্রায় ২ শতাংশের মধ্যে ‘ডব্লিউইএলভি’ ভাইরাসের জীনগত উপাদান পাওয়া যায়। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ভাইরাসটির আরএনএ ভেড়া, ঘোড়া, শুকর এবং কিছু ইঁদুরজাতীয় প্রাণী মতো আরও কিছু প্রাণীর শরীরে পাওয়া যায়।
গবেষক দল পরে উত্তর চীনের বাসিন্দাদের শরীর থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন। দেখা যায়, প্রতি ৬৪০ জন মানুষের মাঝে ১২ জনের শরীরে ভাইরাসটির এন্টিবডি আছে। এছাড়া এঁটেল পোকার কামড়ে আক্রান্ত এমন ২০ জন রোগীর শরীরেও ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া যায়।
যেসব রোগীর জ্বর, দুর্বলতা, মাথাব্যথা, বমি ও ডায়ারিয়ার উপসর্গ ছিল। এমনকি রক্তে অতিরিক্ত শ্বেত রক্তকণিকার উপস্থিতি থাকার কারণে একজন রোগী কোমায় চলে যান। পরীক্ষাগারে গবেষণায় দেখা যায়, ভাইরাসটি মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করতে সক্ষম। যাতে মৃত্যুও হতে পারে।
অবশ্য, চিকিৎসকরা বলছেন, ঠিক সময়ে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দিতে পারলে প্রায় সব রোগীই সেরে ওঠেন।