দরজায় কড়া নাড়ছে খ্রিস্টীয় নতুন বছর ২০২৫। আর এরই মধ্যে আগামী বছর কী হতে পারে তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। আর এক্ষেত্রে বিভিন্ন দার্শনিক কিংবা জ্যোতিষের ভবিষ্যদ্বাণী আসছে সামনে। ২০২৪ সালে কী হতে পারে, এমন ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গেছে বেশ কয়েকজনের। তাদের মধ্যে একজন ফ্রান্সের জ্যোতির্বিদ নস্ত্রাদামুস। ২০২৫ সালের জন্য তিনি কী বলে গেছেন?
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, নস্ত্রাদামুসকে বলা হয় ‘প্রফেট অব ডোম’। পনের শতকের এই ব্যক্তি কাব্যিক চতুষ্পদী শ্লোকের মাধ্যমে দিয়ে গেছেন ভবিষ্যদ্বাণী। ২০২৫ সালের জন্য তিনি বলে গেছেন, এ বছর যুদ্ধ থামতে পারে। ব্রাজিলে হতে পারে ভয়াবহ দুর্যোগ। এ ছাড়া প্লেগের মতো মহামারি দেখা দিতে পারে যুক্তরাজ্যে।
২০২৫ সালের জন্য নস্ত্রাদামুসের দেওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ ভবিষ্যদ্বাণী হচ্ছে, পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে বড় কোনো গ্রহাণু।
এর আগে নস্ত্রাদামুসের বেশ কয়েকটি ভবিষ্যদ্বাণী সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো অ্যাডলফ হিটলারের আধিপত্য, ১১ সেপ্টেম্বরে টুইন টাওয়ারে হামলা ও হালের করোনা মহামারি।
লেস প্রফেটিস (দ্য প্রফেসিস) নামের বইয়ের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন নস্ত্রাদামুস। ১৫৫৫ সালে প্রকাশিত এই বইতে ৯৪২টি কাব্যিক চতুষ্পদী শ্লোক রয়েছে। আর সেগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন ঘটনাকে রুপকভাবে উপস্থাপন করেছেন তিনি।
২০২৫ সালের জন্য নস্ত্রাদামুসের কাব্যিক চতুষ্পদী শ্লোক বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা কিছু ইতিবাচক ও নেতিবাচক ঘটনা পেয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হতে যাচ্ছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। ফ্রান্সের জ্যোতির্বিদ নস্ত্রাদামুসের শ্লোকে যুদ্ধ বন্ধের ইঙ্গিত রয়েছে। এতে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ যুদ্ধের পর সেনারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, সেনাদের জন্য তারা কোনো অর্থ আর পায়নি; সোনা বা রুপার পরিবর্তে তারা মুদ্রায় আনবে চামড়া, গ্যালিক (ফরাসি) পিতল ও চাঁদের অর্ধচন্দ্র চিহ্ন।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এখানে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। আর গ্যালিক পিতল ও অর্ধচন্দ্র চিহ্নের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে এই যুদ্ধ বন্ধে ফ্রান্স ও তুরস্ক মধ্যস্থতা করবে।
নস্ত্রাদামুসের ভবিষ্যদ্বাণীতে ভয়াবহ তথ্য রয়েছে যুক্তরাজ্যের জন্য। ভবিষ্যদ্বাণীতে একটি ‘নিষ্ঠুর যুদ্ধ’ ও একটি প্রাচীন প্লেগের পূর্বাভাস আছে। আর এসব সংকট শত্রুর চেয়েও ভয়াবহ হবে তাদের জন্য। বলা হচ্ছে, এই প্লেগের ধ্বংসাত্মক প্রভাব বর্তমান রাজপরিবারের বিভাজন ও রাজনৈতিক টানাপোড়েনের প্রতীক হতে পারে।
নস্ত্রাদামুস আরও ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, একটি বিশাল গ্রহাণু পৃথিবীর কাছাকাছি আসতে পারে। এটি পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়াতে পারে। এতে হয়তো পৃথিবীর মানবসভ্যতাই বিলীন হয়ে যাবে। তবে এতটা ভয়াবহভাবে তিনি উল্লেখ করেননি। প্রতি বছরই অনেক গ্রহাণু পৃথিবীর খুব কাছে চলে আসে।
ব্রাজিল প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন নস্ত্রাদামুস। একটি জলজ সাম্রাজ্যের উত্থানের ইঙ্গিতও রয়েছে নস্ত্রাদামুসের ভবিষ্যদ্বাণীতে। এ বিষয়ে তাঁর কবিতার লাইনগুলো ছিল—‘গভীর থেকে এক শাসক উঠে আসবেন। প্লাবনের মাঝে নতুন সাম্রাজ্যের জন্ম হবে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি হয়তো মহাপ্লাবনের মতো কোনো ঘটনার মাধ্যমে একটি নতুন সাম্রাজ্য সূচনার ইঙ্গিত। তবে এ ধরনের ঘটনা কেমন হতে পারে, তা এখনো বের করতে পারেননি বিশ্লেষকেরা।