উত্তর কোরিয়া এই বছর রাশিয়ায় অতিরিক্ত আরও ৩ হাজার সেনা পাঠিয়েছে এবং কিয়েভের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মস্কোকে সাহায্য করার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র, কামান ও গোলাবারুদ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সিউলের সামরিক বাহিনী এই তথ্য জানিয়েছে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে মস্কোর আক্রমণের পর থেকে মিত্র রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়া আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। মস্কোকে হাজার হাজার সেনা এবং অস্ত্র পাঠিয়ে সাহায্য করার জন্য সিউল কিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।
তবে মস্কো বা পিয়ংইয়ং কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যখন উত্তর কোরিয়ায় এক বিরল সফর গিয়েছিলেন, তখন উভয় দেশ একটি বিশাল সামরিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। যার মধ্যে পারস্পরিক প্রতিরক্ষার বিষয়টিও ছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ বলেছেন, ‘জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে অতিরিক্ত ৩ হাজার সেনা পাঠানো হয়েছিল বলে অনুমান করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেছেন, ‘রাশিয়ায় প্রাথমিকভাবে পাঠানো ১১ হাজার উত্তর কোরিয়ার সেনার মধ্যে ৪ হাজার জন নিহত বা আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
জেসিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জনবলের পাশাপাশি উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র, কামান সরঞ্জাম এবং গোলাবারুদ সরবরাহ করে চলেছে।’ এতে আরো বলা হয়েছে, ‘এখন পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়া উল্লেখযোগ্য পরিমাণে স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (এসআরবিএম) সরবরাহ করেছে, সেইসঙ্গে প্রায় ২২০ ইউনিট ১৭০ মিমি স্ব-চালিত বন্দুক এবং ২৪০ মিমি মাল্টিপল রকেট লঞ্চার সরবরাহ করেছে।’
বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, নেতা কিম জং উন এআই প্রযুক্তি সম্বলিত নতুন আত্মঘাতী এবং গোয়েন্দা ড্রোনের পরীক্ষার তদারকি করেছেন।
কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, নতুন কৌশলগত গোয়েন্দা ড্রোনটি বিভিন্ন কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু এবং স্থল ও সমুদ্রে শত্রু বাহিনীকে পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম’।
বিশেষজ্ঞরা তখন সতর্ক করেছেন, রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধের জন্য পাঠানো উত্তর কোরিয়ার সেনারা আধুনিক যুদ্ধের অভিজ্ঞতা অর্জন করবে। যার মধ্যে রয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোন কীভাবে ব্যবহার করা হয়।
কিম আক্রমণাত্মক ড্রোনগুলোর ব্যাপকভাবে উৎপাদনের নির্দেশ দিয়েছিলেন চার মাস আগে। এটি বিস্ফোরক বহন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে শত্রু লক্ষ্যবস্তুতে বিধ্বস্ত করা যায়। কার্যকরভাবে নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবেও কাজ করে। ২০২২ সালে পিয়ংইয়ং সীমান্তের ওপারে ড্রোন পাঠিয়েছিল যেগুলো সিউলের সামরিক বাহিনী গুলি করে ভূপাতিত করতে পারেনি, তারা বলেছিল এগুলো খুব ছোট।
সূত্র : এএফপি