পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের সেনাবাহিনী জাতীয় টেলিভিশনে সামরিক অভ্যুত্থানের ঘোষণা দিয়ে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে আটক করেছে। অভ্যুত্থানের পর সংবিধান ভেঙে দিয়ে সব প্রতিষ্ঠানকে সাসপেন্ড করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এমনকি সীমান্তও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশব্যাপী রাত্রিকালীন কারফিউও জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে বুধবার সকাল থেকে প্রেসিডেন্ট গার্ডের সৈন্যরা আটক করে রেখেছে।
এ সময় প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, রক্ষীরা অর্থহীন গণতন্ত্রবিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে। প্রেসিডেন্টের পরিবারের সদস্যদের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদেই রাখা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস প্রেসিডেন্ট বাজুমের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এ সময় তারা প্রেসিডেন্ট বাজুমের প্রতি ওয়াশিংটন এবং জাতিসংঘের পূর্ণ সমর্থনের কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
মূলত মোহাম্মদ বাজুম পশ্চিম আফ্রিকায় ‘ইসলামি জঙ্গিবাদের’ বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পশ্চিমা মিত্র বলে পরিচিত। এর আগে নাইজারের দুটি প্রতিবেশী দেশ মালি এবং বুরকিনা ফাসো, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জিহাদি বিদ্রোহের কারণে সামরিক অভ্যুত্থানের সম্মুখীন হয়েছে।
বুধবার রাতে একদল সৈন্য জাতীয় টেলিভিশনে ঘোষণা করেন, প্রেসিডেন্টকে তার পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। অভ্যুত্থান ঘোষণা করে কর্নেল আমাদু আবদরামান জানান, দেশের সীমান্তগুলো বন্ধ করা হয়েছে এবং দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এ সময় দেশটির প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনীর আরও ৯ কর্মকর্তা তাকে ঘিরে ছিলেন।
তার দাবি, ‘নিরাপত্তা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি এবং দুর্বল অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুশাসনের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের সব প্রতিষ্ঠান সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং মন্ত্রণালয়ের প্রধানরা তাদের প্রতিদিনের দায়িত্ব সামলাবেন।
মেজর আমাদু আবদরামান বলেন, ‘আমাদের কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ না করার জন্য সব বিদেশি অংশীদারদের বলা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত স্থল ও আকাশ সীমান্ত বন্ধ রাখা হবে।’
২০২১ সালের মার্চ মাসে নাইজারে সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের ব্যর্থ চেষ্টা হয়েছিল। ওই সময় প্রেসিডেন্ট বাজুমের শপথ নেওয়ার কয়েক দিন আগে দেশটির সামরিক বাহিনীর একটি ইউনিট প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখলের চেষ্টা করে।