আব্রাহাম লিংকন বলেছেন, ‘যার মা আছে, সে কখনোই গরিব নয়।’ ‘মা’ অমূল্য সম্পদ। মাকে ভালোবাসে সবাই প্রতি মুহূর্ত, প্রতিদিন। মাকে সম্মান কিংবা ভালোবাসা জানানোর বিশেষ কোনো দিনের আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন পড়ে না।
তবু এই বিশেষ দিনটির গুরুত্ব আছে। তাই তো প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস পালিত হয়। এবারও হচ্ছে। দিবসটিতে মাকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি সন্তানেরা অনেক উপহার দেন। কেউ ফুল, চকলেট, কার্ড, কেউবা বিভিন্ন ডিজাইনের মগ উপহার দিতে পছন্দ করেন। কিন্তু কবে, কীভাবে এলো মা দিবস? চলুন জেনে নিই এর পেছনের গল্প।
যুক্তরাষ্ট্রে মা দিবসের প্রচলন শুরু হয়। দিবসটির প্রবক্তা হলেন আনা মারিয়া রিভস জার্ভিস। তাঁর মা অ্যান মারিয়া রিভস জার্ভিস ছিলেন একজন শান্তিবাদী সমাজকর্মী। সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের সাহায্য করতেন তিনি। তাঁদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করতেন। ধর্মপ্রাণ ও শান্ত প্রকৃতির এই নারী নির্ভরযোগ্যভাবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘মাদারস ডে ওয়ার্ক ক্লাব’।
একদিন মেয়ে আনাকে তিনি বিনয়ের সঙ্গে বলেন একটা মা দিবস দরকার। মায়েদের মনুষ্যত্ব ও ত্যাগের প্রতি সম্মান করে একটি দিন তাঁদের উৎসর্গ করা প্রয়োজন। আনা মায়ের কথার মর্ম বুঝতে পারেন এবং মায়ের সঙ্গে সামাজিক কর্মকাণ্ডে যোগ দেন।
১৯০৫ সালে অ্যান মারিয়া রিভস জার্ভিস মারা যান। এরপর মেয়ে আনা মারিয়া মায়ের স্বপ্ন পূরণের পথে চলতে থাকেন। সব মাকে শ্রদ্ধা জানাতে একটি দিবস প্রচলন করতে সক্ষম হন তিনি।
এটা ১৯০৮ সালের ঘটনা। পশ্চিম ভার্জিনিয়ার একটি গির্জায় আনা মারিয়া তাঁর মায়ের স্মরণে একটি অনুষ্ঠান করেন এবং মা দিবসের স্বীকৃতি দিয়ে সরকারি ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব রাখেন তিনি। কিন্তু সেই সময় মার্কিন কংগ্রেস মা দিবসকে স্বীকৃতি দিয়ে সরকারি ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব নাকচ করে।
কিন্তু এতে থেমে যাননি আনা। নিজের উদ্দেশ্যকে সফল করার জন্য অনেক চেষ্টা করতে থাকেন। তাঁর চেষ্টা বিফলে যায়নি। অবশেষে ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। দিনটি সরকারি ছুটি হিসেবে পালন করার নির্দেশ দেন তিনি। এর পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস হিসেবে পালিত হতে শুরু হয়।