নেপালি শেরপা তথা পর্বতারোহী কামি রিতা এভারেস্টের চূড়ায় উঠে বিশ্ব রেকর্ড করেছেন। এ নিয়ে তিনি ৩০ তম বারের মতো এভারেস্ট চূড়ায় উঠলেন। এর আগে তার চেয়ে আর কেউ বেশি বার বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণ করেননি।
স্থানীয় সময় বুধবার (২২ মে) সকালে তিনি এভারেস্ট চূড়ায় পৌঁছান।
বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
কামি রিতার পর্বত আরোহণের বিষয়টি নিয়ে কাজ করা সংস্থা সেভেন সামিট ট্রেকসের কর্মকর্তা মিংমা শেরপা বিষয়টি নিশ্চিত করে এএফপিকে বলেন, “কামি রিতা আজ সকালে (এভারেস্টের) চূড়ায় পৌঁছেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি এভারেস্ট চূড়ায় সর্বোচ্চ ৩০ বার আরোহণের নতুন রেকর্ড গড়লেন।”
এর আগে, গত ১২ মে সকাল ৭টার কিছু পরে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু এই পর্বতে বেশিবার আরোহণের নতুন রেকর্ড গড়েন ৫৪ বছর বয়সী কামি রিতা। সেবার তিনি ২৯তম বারের মতো তিনি ৮৮৪৯ মিটার উঁচু এভারেস্ট চূড়ায় পৌঁছান। তাঁর এভারেস্ট-যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। ওই সময় থেকেই গাইড হিসেবে পর্বতারোহীদের পথ দেখান কামি রিতা। তারপর থেকে প্রায় প্রতি বছরই চূড়াটি জয় করছেন। এর মধ্যে বাদ পড়ে কেবল ২০১৪,২০১৫ ও ২০২০ সাল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগের রেকর্ডটিও অবশ্য কামি রিতারই ছিল। গত বছর বসন্তে এক সপ্তাহের মধ্যে দুবার ৮ হাজার ৮৪৯ মিটার এই পর্বতের চূড়ায় উঠে আগের রেকর্ডটি করেছিলেন তিনি। অর্থাৎ সপ্তাহের যে দুবার কামি রিতা এভারেস্টে উঠেছিলেন, সেগুলো ছিল তার যথাক্রমে ২৭তম ও ২৮তম এভারেস্ট আরোহণ।
এভারেস্টে সর্বোচ্চবার আরোহণের দ্বিতীয় রেকর্ড যার, তিনিও একজন নেপালি, নাম পাসাং দাওয়া শেরপা। এ পর্যন্ত ২৭বার এভারেস্টে উঠেছেন তিনি। উল্লেখ্য, নেপালের আঞ্চলিক ভাষায় এভারেস্টের নাম ‘সাগরমাতা’।
মে মাসকে এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছানোর আদর্শ সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। হিমালয় অঞ্চলের দেশটি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ট্র্যাকিং, পর্বতারোহণ ও পর্যটনের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। তবে এভারেস্ট জয়ের জন্য বেশি সংখ্যক পর্বতারোহীকে সুযোগ দিয়ে সম্প্রতি সমালোচনার মুখে পড়েছে। বলা হচ্ছে এই পর্বতারোহীদের অনেকেই অনভিজ্ঞ।
বিশেষ করে পর্বতচূড়ার ঠিক নিচে অবস্থিত হিলারি স্টেপ নামের জায়গাটিতে এই অতিরিক্ত পর্বতারোহীর কারণে বিপজ্জনক ভিড় সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০১৯ সালে পর্বতারোহীদের ওঠা–নামার সময় এ ধরনের ভিড়ের কারণে মানুষের সারি তৈরি হলে, ক্লান্ত, বিপর্যস্ত নয়জন পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়।
হিমালয়ান ডেটাবেইস ও নেপালের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৩ সালে প্রথম এভারেস্ট জয়ের পর থেকে নেপালি ও তিব্বতি অংশ দিয়ে ১১,০০০ বারের বেশিবার চূড়ায় আরোহণ করেছেন পর্বতারোহীরা। এদের মধ্যে অনেকেই অবশ্য একাধিকবার জয় করেছেন সর্বোচ্চ শিখরটি। আর সর্বোচ্চ চূড়াটি জয় করার চেষ্টা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৩২০ জনের বেশি মানুষ।